ভারতের একটি জেলখানায় এক পাকিস্তানি বন্দীকে হত্যা করেছে অন্য কয়েদিরা। ঘটনা পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজস্থান রাজ্যের রাজধানী জয়পুর কেন্দ্রিয় জেলখানার। বুধবার কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, টিভির সাউন্ড নিয়ে বিতর্কের জের ধরে তাকে মারধর করে কয়েকজন ভারতীয় কয়েদি। এতে মৃত্যু হয় ওই পাকিস্তানি কয়েদির।
পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্য হওয়ায় রাজস্থানে পাকিস্তানিদের আগমন ঘটে প্রতিদিন। ব্যবসায় বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে প্রচুর পাকিস্তানি আসেন সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে। ৫০ বছর বয়সী শাকির উল্লাহ নামের ওই পাকিস্তানি বেআইনি কর্মকাণ্ডের কারণে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ৮ বছর ধরে আছেন ওই জেলখানায়। ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত রায় হয়েছে।
কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চারজন বন্দী এক সাথে টিভি দেখছিলেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া লাগে। তিন ভারতীয় একটি বড় পাথর দিয়ে শাকির উল্লাহর ওপর হামলা চালায়। তারা শাকিরের মাথা গুড়িয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন জয়পুরের অতিরিক্ত কমিশনার লক্ষণ গৌর।
তিনি জানান, বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে তারা বড় পাথর কোথায় পেয়েছেন এবং ঘটনাস্থলের আশপাশে কোন পুলিশ ছিল না।
সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তারা, একটি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ দল ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা দ্রুত জেল খানায় ছুটে যান খবর পেয়েছে। একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করবে।
আনন্দবাজার জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জয়পুর জেলে বন্দি ছিলেন অনুপ্রবেশ এবং গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার পাক নাগরিক শাকিরুল্লাহ। জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, বুধবার সকালে তার উপর চড়াও হন জেলের অন্যান্য আবাসিকরা। মূলত সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামী তাঁকে মারধর শুরু করে। তার সঙ্গে যোগ দেন অন্য বন্দিরাও। শাকিরুল্লাকে বেধড়ক পেটানো হয়। জেলের একটি সূত্রে খবর, বাঁশ-লাঠি দিয়ে পেটানোর পাশাপাশি তাঁকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। ঘটনাস্থলেই নেতিয়ে পড়েন শাকিরুল্লাহ।
খবর পেয়েই জেলের বিপদ ঘণ্টি বাজানো হয়। সঙ্গে সঙ্গেই জেলের নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে যান। ক্ষিপ্ত বন্দিদের হাত থেকে শাকিরুল্লাহকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনকেও খবর পাঠানো হয়। একটি মেডিক্যাল টিম এবং পুলিশ কর্মীরা গিয়ে শাকিরুল্লাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শাকিরুল্লার।
আনন্দবাজার বলছে, কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর ওপর আত্মঘাতি হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করা হচ্ছে ভারতের পক্ষ থেকে। ওই হামলার জেরেই পাকিস্তানি নাগরিককে হত্যা করলো ভারতীয়রা।