এক মাসে ৪৫০ কোটি টাকা না দিলে জেল হবে আম্বানির

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রিলায়েন্স গ্রুপের অনিল আম্বানিকে আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। এর পাশাপাশি একটি টেলিকম সংস্থার পাওনা সাড়ে চারশো কোটি টাকা শোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। এর অন্যথা হলে অনিল আম্বানিকে জেলে যেতে হবে বলে বুধবার আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

দায়ের করা এক মামলার অভিযোগে সুইডিশ টেলিকম সংস্থা এরিকসন জানায়, রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের পক্ষ থেকে তাদের প্রাপ্য টাকা শোধ করা হচ্ছে না।

২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর আদালত রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এরিকসনের সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি এটাও বলেছিলেন, বকেয়া মেটাতে দেরি হলে বছরে ১২ শতাংশ সুদও দিতে হবে তাদের। কিন্তু ২৩ অক্টোবরের সেই নির্দেশ অনুযায়ী সময় মতো টাকা মেটাতে পারেনি অনিলের সংস্থা। ফলে সুদ সমেত ৪৫০ কোটি টাকা মেটানোর জন্য অনিল অম্বানীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার আদালতে এ বিষয়ে শুনানির এক পর্যায়ে বিচারপতি আর এফ নরিম্যান ও বিনিত শরনের বেঞ্চ জানান, আদালত অর্থ পরিশোধের জন্য অনিল আম্বানিকে যে আদেশ দেয়া হয়েছিল, তা ইচ্ছাকৃতভাবেই পালন করছে না আম্বানিদের এই সংস্থাটি। ফলে তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননারও অভিযোগ আনা হয়। এ অবমাননার জন্য অনিল আম্বানি ও সংস্থার দুই কর্মকর্তাকে এক কোটি টাকা করে জরিমানাও করেন আদালত।

এ টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের তিন মাস করে হাজতবাস করতে হতে পারে। অনিল আম্বানি ছাড়া বাকি দুই ব্যক্তি হলেন রিলায়েন্স টেলিকমের চেয়ারম্যান সতিশ শেঠ ও রিলায়েন্স ইনট্রাটেলের চেয়ারপার্সন ছায়া ভিরানি।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ মামলার এক শুমানির সময় এরিকসন খোঁচা মেরে বলে, রাফাল প্রকল্পের জন্য অনিলের সংস্থা টাকা বিনিয়োগ করতে পারছে, অথচ তাদের বকেয়া ৪৫০ কোটি টাকা দিচ্ছে না। যদিও এরিকসনের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে অনিলের সংস্থা।

আদালতকে অনিল অম্বানী জানিয়েছেন, এরিকসনের বকেয়া মেটানোর জন্য তারা সর্বোতভাবে চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে তার ভাই মুকেশ আম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স জিও-র সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছিল তা ব্যর্থ হওয়ায় সমস্যায় পড়েছে তার সংস্থা।

২০১৪ সালে এরিকসন ইন্ডিয়া অনিল আম্বানির সংস্থার সাথে সাত বছরের একটি চুক্তি করে। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ করেনি রিলায়েন্সের সাথে জড়িত এই সংস্থা। ফলে ঋণ জর্জরিত এই সংস্থার বিরুদ্ধে ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে মামলা দেয় এরিকসন। সে মামলায় গড়ায় দেশের শীর্ষ আদালত পর্যন্ত।

সূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top