পাকিস্তান সফরের পর ত্রিশ ঘণ্টা হাতে নিয়ে ভারত সফরে গিয়েছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বুধবার রাতেই রিয়াদের উদ্দেশে রওয়ানা হবেন তিনি
বিদেশি অতিথি ভারত গেলে আন্তরিকতা বোঝাতে গিয়ে প্রটোকল ভাঙেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগেও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের জন্যও এমন ঘটনা ঘটিয়েছিলেন মোদি।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ভারত গেলে তার জন্য আবারো প্রটোকল ভাঙেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। মঙ্গলবার রাতে প্রতিনিধি দল নিয়ে ভারতের বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর প্রটোকল ভেঙ্গে তাকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
খাশোগি হত্যাকাণ্ডের জন্য চাপে থাকা মোহাম্মদ বিন সালমান বেশ অনেকদিন পর সফরে বের হয়েছেন। এ সফরের প্রথম পর্বে তিনি পাকিস্তান যান। ভারতের সফরের বিষয়টি এর পরপর থাকলেও দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে এতে আপত্তি জানায় ভারত।
কূটনৈতিক সূত্রে জানায়, পাকিস্তান থেকে নয়, দেশে ফিরে গিয়ে যুবরাজকে ভারতে আসার কথা বলা হয়। যুবরাজ ভারতের দাবি মেনে নিয়ে কয়েক ঘণ্টার জন্য নিজ দেশে ফিরে যান। এরপর ভারতের উদ্দেশ্যে রিয়াদ ছাড়েন যুবরাজ। মঙ্গলবার রাতে নয়াদিল্লির বিমানবন্দরে যুবরাজ বিন সালমানকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী।
এ সফরে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনা হবে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুবরাজের সফরে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে বিনিয়োগ, পর্যটন, আবাসন এবং তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ে ৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে।
বুধবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট রামনাথ কোবিন্দ। লাল গালিচা সংবর্ধনায় সিক্ত হয়ে যুবরাজ বলেন, ‘সৌদি আরব ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ট। প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রেসিডেন্ট রামনাথের নেতৃত্বে এ সময়ে আমি নিশ্চিত আমরা সৌদি আরব ও ভারতের জন্য সেরা কিছু বয়ে আনতে পারব।
ভারত বাণিজ্যের দিক দিয়ে সৌদি আরবের চতুর্থ বৃহত্তম সহযোগী। এছাড়া ভারতের জ্বালানির অন্যতম সহযোগী দেশ সৌদি। দেশটির অপরিশোধিত তেলের ১৭ ভাগ ও এলপিজির ৩২ ভাগই আসে সৌদি আরব থেকে।
সম্প্রতি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ৪০ জনের বেশি ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ায় ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, সৌদি আরব দুই দেশের এই উত্তেজনা দূর করার বিষয়ে প্রস্তাব দিতে পারে। সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসে চেষ্টা চালাবে রিয়াদ। ওই ঘটনার পরপরই পাকিস্তান সফরে যান সৌদি যুবরাজ।
সেখানে ইসলামাবাদের ‘আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা’ প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন যুবরাজ। একই সঙ্গে পাকিস্তানের মাটিতে পা রেখেই সেখানে ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করেছেন সৌদি যুবরাজ।