ভারত শাসিত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত হন। আহত হন আরো অনেক। কীভাবে এই হামলা চলোনো হয়? এই হামলার পরিকল্পনাই বা বাস্তবায়ন করা হয়েছিল কীভাবে?
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) জানায়, অত্যাধুনিক ডার্ক ওয়েব প্রযুক্তি ব্যবহার করেই হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা সিম কার্ড ব্যবহার না করেনি। গোয়েন্দা নজর এড়াতে বেতার তরঙ্গের সাহায্যে সাংকেতিক মেসেজ আদানপ্রদান করেছে হামলাকরীরা। ছক কষেই পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয়ে হামলা চালানো হয়েছিল।
ভারতীয় এনআইএ’র তদন্তে আরো বলা হয়েছে, রাওয়ালপিণ্ডির সেনা হাসপাতালে শুয়েই হামলার ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছিল জইশ-ই-মুহাম্মদ প্রধান মাসুদ আজহার। হামলার দায়িত্ব পায় মাসুদ ঘনিষ্ঠ কামরান। এই অপারেশনের জন্য আদিল আহমেদকেই আত্মঘাতী জঙ্গি হিসেবে নির্বাচিত করে কামরান। তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
প্রচলিত সিম কার্ড নয়। পুলওয়ামা বিস্ফোরণে অত্যাধুনিক ডার্ক ওয়েব প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল হামলাকরীরা। গোয়েন্দা নজরদারি এড়াতে পিয়ার টু পিয়ার সফ্টওয়্যারের সাহায্যে ‘YSMS’ এর মাধ্যমেই সাংকেতিক মেসেজ আদানপ্রদান করত হামলাকরীরা। হামলার পর সেরকমই দুটি বার্তা উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। একটিতে লেখা ছিল- ‘মুজাহিদিন জৈশ মুহাম্মদের সফল শেষকৃত্য’। অন্য বার্তায় লেখা ছিল- ‘হামলায় অসংখ্য ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু, ধ্বংস একাধিক গাড়ি’।
উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বেতার তরঙ্গ ব্যবহার করে দুই ব্যক্তির মধ্যে সাংকেতিক ভাষায় ‘YSMS’ পাঠানো হয়। যার মূল মাধ্যম হল রেডিও সেট। মোবাইল হ্যান্ডসেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি রেডিও সেট। আর সেই রেডিও সেটের বেতার তরঙ্গকেই ওয়াইফাই হিসেবে ব্যবহার করে বার্তা পাঠানো হয়। এরফলে শুধু মেসেজের গোপনীয়তাই রক্ষা করা সম্ভব হয় তা নয়। গোয়েন্দাদের রাডারেও তা ধরা পড়ে না।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাদের দাবি, ২০১২ সাল থেকে সক্রিয় ডার্ক ওয়েব প্রযুক্তি। উগ্রবাদী সংগঠনগুলি এই প্রযুক্তির অত্যাধুনিক ভার্সন ব্যবহার করে। ২০১৫ সালে উগ্রবাদী সাজ্জাদ আহমেদকে গ্রেফতারের পর ‘YSMS’ প্রযুক্তি সামনে আসে। তবে এখনও তার কোড উদ্ধার করতে পারেনি ভারতীয় সেনাবাহিনী। সে কারণেই সম্ভবত পুলওয়ামা হামলার আঁচ পাননি গোয়েন্দারা।
সূত্র : জি নিউজ।