নারায়ণগঞ্জের বন্দরে তিন নারীকে অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় মেম্বার ইউছুফসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ২০জনসহ মোট ২৯ জনকে আসামী করে সোমবার বিকেলে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার ফাতেমা ওরফে ফতেহ। এর আগে ঘটনা তদন্তে নারায়ণগঞ্জে আসেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তিন সদস্য। নয়াদিগন্ত অনলাইনে রোববার রাতে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর ঘটনাটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জে তোলপাড় শুরু হয়।
সোমবার বেলা ১২টায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) জেলা ও দায়রা জজ আল মাহমুদ ফায়জুল কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম নারায়ণগঞ্জে আসেন। টিমের অন্য দুই সদস্য হলেন, উপ-পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) গাজী সালাম ও সদস্য বাঞ্চিতা চাকমা।
তারা নির্যাতিত ফাতেমা বেগমের সাথে কথা বলে ঐ দিনের ঘটনার বিস্তারিত শোনেন। পরে বন্দর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলামকে মামলা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেন।
এর আগে মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা নারায়ণগঞ্জে আসার পর নির্যাতিত ফাতেমা আক্তার ওরফে ফতেহকে হাসপাতাল থেকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে নিয়ে আসা হয়। পরে আদালতের একটি কক্ষে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। ভুক্তভোগী ফাতেমা মানবাধিকার কমিশনের সদস্যদের কাছে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা বিস্তারিত খুলে বলেন। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্নগুলোও দেখান তিনি।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) আল মাহমুদ ফায়জুল কবির জানান, ভুক্তভোগী নারীর সাথে আলাপ হয়েছে। তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনেছি। পরে বন্দরের ওসির সাথে আলাপ হয়েছে। যে ঘটনা ঘটেছে তা জামিন অযোগ্য অপরাধ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় মামলা করবেন। থানায় মামলা নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এই মামলা পরিচালনায় ভুক্তভোগীর সর্বাত্মক সহযোগিতায় পাশে থাকবে মানবাধিকার কমিশন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বারের সাবেক সভাপতি এড. আনিসুর রহমান দিপু জানান, এই মামলায় ভুক্তভোগীদের সহায়তা করবো আমি। এই মামলার দায়িত্ব আমি নিতে চাই। আইনি যেকোনো সহযোগিতার জন্য আমি তাদের পাশে আছি।
উল্লেখ্য, দাবিকৃত চাঁদা না পেয়ে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গত শনিবার বিকেলে তিন নারীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার ঘটনা ঘটে। তাদের গাছের সাথে বেঁধে রেখে মাথার চুল কেটে দেয়া হয়। কেবল নির্যাতনই নয় তাদের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর চালানো হয়।