বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ভারতের প্রতি সরকারের তোষামোদি নীতি আর ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির যুপকাষ্ঠে তিস্তার পানির উপর বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির প্রবাহে বাংলাদেশের ন্যায্য ও আইনানুগ অংশীদারিত্বের বিষয়টি এখন আর ভারতের সাথে গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য হিসেবে নেই।
সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন। এতে তিনি আরো বলেন,দেশের অস্তিত্বের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি এখন আর বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের মধ্যেও নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমনের ‘তিস্তা সামান্য বিষয়’ এই বক্তব্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরছে। তিনি এই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে একে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইলিশ মাছ আর জামদানী শাড়ি উপহারের কুটনীতি দিয়ে তিস্তার পানিও পাওয়া যাবে না, সীমান্ত হত্যাও বন্ধ হবে না। তিনি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমতা, ন্যায্যতা ও আন্তর্জাতিক বিধিবিধান অনুযায়ী ভারতের সাথে দ্বি-পাক্ষিক সমস্যাদি সমাধানের উদ্যোগ নেবার আহ্বান জানান।
পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা আকবর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আবু হাসান টিপু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, মুকলেছুর রহমান, শাহাদাৎ হোসেন খোকন, রাশিদা বেগম, এ্যাপোলো জামালী, ইমরান হোসেন, আবুল কালাম প্রমুখ।
সাইফুল হক সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশীদের ধারাবাহিক হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা জানান এবং একে ভারতের আগ্রাসী বৈরী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে উল্লেখ করেন। গত দেড় মাসে বিভিন্ন সীমান্তে বিএসএফ ১০ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে, আহত করেছে অনেককে। বিএসএফ’র এই সহিংস তৎপরতা একদিকে আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের লংঘন আর অন্যদিকে সীমান্ত হত্যা ‘শূন্যে’ নামিয়ে আনতে বিজিবি-বিএসএফ এর মধ্যকার চুক্তিরও বিরুদ্ধাচারণ। সীমান্তে বিএসএফ’র এই তৎপরতা কোনভাবেই সৎ প্রতিবেশীর পরিচয় নয়।
বহ্নিশিখা জামালী বলেন, যেহেতু আমরা কেউই প্রতিবেশী পাল্টাতে পারবো না, সে কারণে পারস্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতিতে এবং সমমর্যাদার ভিত্তিতে সমস্যাদি সমাধানে রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখার শত্রুতার মনভাব নিয়ে ভারতের স্বার্থও নিশ্চিত হবে না। তিনি দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকারকে সংকট সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। সমাবেশ শেষে তিনি বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড, পল্টন ও বিজয়নগর হয়ে সেগুনবাগিচায় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।