পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি মোদির

পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে আলোচনার সব ধরনের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। পুলওয়ামায় যে নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে, তাতে ইসলামাবাদের সাথে আলোচনা সময় পার হয়ে গেছে। সোমবার ভারত সফররত আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেয়া যৌথ এক বিবৃতিতে এ হুঙ্কার দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মোদি বলেন, আমরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে অনেক আলোচনা করেছি। অনেক দেশের সাথে ভারত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায়ও বিষয়টি উত্থাপন করেছে। এখন আর আলোচনা সময় নেই। এখন সময় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার। বিশ^বাসীকে তিনি একই সাথে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র এবং যেসব দেশ সন্ত্রাসীদের সমর্থন দেয় তাদের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করতে আহ্বান জানান।

ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামাতে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনী-সিআরপিএফের গাড়ি বহরে এক আত্মঘাতী হামলায় ৪৪ জওয়ানের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়। নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী জয়েশ-ই-মোহাম্মদ এ হামলা চালিয়েছে। এ হামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন মোদি।

ভারত এ হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে একঘরে করে ফেলার ব্যবস্থা নিয়েছিল। কিন্তু চীনের বাধার মুখে তাদের সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। এরপর দিল্লি পাকিস্তানি আমদানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। একই সাথে সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের তালিকা থেকেও পাকিস্তানের নাম বাদ দেয় তারা।

১৪ ফেব্রুয়ারির ওই হামলার প্রেক্ষিতে সোমবার এক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জয়েশ-ই মোহাম্মদের সদস্যের ওপর অভিযান চালিয়ে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী কামরানকে হত্যা করেছে বলে দাবি করে ভারত। রোববার রাত থেকে পরিচালিত এ অভিযানে তিন মেজরসহ নিরাপত্তা বাহিনীর চারজন নিহত হয়। অন্যদিকে কামরানসহ জয়েশ-ই মোহাম্মদের দুইজনকে তারা হত্যা করেছে বলে জানায়। এ সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন সাধারণ মানুষও নিহত হয়।

এছাড়া দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কেও আরো চিড় ধরেছে। ভারত আগেই পাকিস্তান থেকে তাদের হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়াকে ডেকে নিয়েছিল। পরে পাকিস্তানও একই পথ ধরে। তারা ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সোহেল মাহমুদকে ডেকে পাঠায়। সোমবার সকালে তিনি দিল্লি ত্যাগ করেন। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঘটনা পর্যালোচনার জন্য তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। এর আগে পুলওয়ামা ঘটনার পরপরই সোহেল মাহমুদকে ডেকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে যে কোনো ধরনের হামলার জন্যই পাকিস্তানকে দায়ী করা হয়ে থাকে। পাকিস্তান এ ধরনের হামলার নিন্দা জানালেও কোনো প্রকার দায় নেয় না। ১৯৪৭ সাল থেকেই কাশ্মিরকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এ দ্বন্দ্ব চলে আসছে। মাঝে মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি হলেও শেষ পর্যন্ত অবস্থা আগের মতই।

সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top