বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ‘ম্যাডামকে বিদেশে নিতে যে দীর্ঘসময়ের জার্নি, সে বিষয়ে প্রস্তুতির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। মেডিকেল বোর্ড বলেছে, যুক্তরাজ্যে নেওয়া হলে ৮ থেকে ১৩ ঘণ্টা সময় লাগবে। অথবা যুক্তরাষ্ট্রে নিতে হলে ১৮ থেকে ২১ ঘণ্টা লাগবে। এই জার্নির ক্ষেত্রে তার শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। ম্যাডামের মেডিকেল বোর্ডের যোগাযোগ আগে থেকে হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব ওনার শারীরিক সুস্থতা ফ্লাইংয়ের মতো হলেই বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি দেখা হবে।’
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথেরিন কুক। সাক্ষাৎ শেষে গুলশানে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
রাত সাড়ে ৮টায় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের পতাকাবাহী গাড়ি গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসা ফিরোজায় প্রবেশ করে। তিনি সেখানে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করেন।
এ সময় ব্রিটিশ হাইকমিশনার সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন।
সাক্ষাৎ শেষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘ম্যাডামের স্বাস্থ্য নিয়ে কূটনৈতিক মহলে শঙ্কা ছিল, চিন্তা ছিল। ওনার সুস্থতা নিয়ে সবার একটা প্রশ্ন ছিল। যেহেতু ম্যাডাম একটা পর্যায়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারছেন…, দেশে একটা মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এই পরিবর্তনে। বাংলাদেশে মুক্ত পরিবেশে কূটনীতিকরা তাদের কাজগুলো এখন করতে পারছেন।’
তিনি বলেন, ‘ওদের প্রথম জানার বিষয় ছিল ম্যাডামের শরীর কেমন আছে, ভালো আছেন কি না। ওনার চিকিৎসার জন্য বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি আছে কি না- এসব বিষয় আলোচনা করেছেন।’
‘দ্বিতীয় কথা হয়েছে এই পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে। নতুন প্রেক্ষাপটে আমরা কোথায় যাচ্ছি, বাংলাদেশ কোথায় যাচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলেছেন।’ বলেন খসরু।
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, তাদের যে ভাবনা সেটা ম্যাডামকে তারা বলেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে যুক্তরাজ্য কী করতে চায়, দুই দেশের সস্পর্ক উন্নয়নে তারা কী করতে চায়, সেগুলো ম্যাডামকে অবগত করেছেন।’
আমীর খসরু বলেন, ‘ম্যাডাম যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার কথা বলেছেন।’
এদিন ফিরোজায় পৌঁছালে ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে অভ্যর্থনা জানান খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার ও সদস্য অধ্যাপক এএফএম সিদ্দিক এবং দলের স্পেশাল অ্যাসিসট্যান্ট টু দ্য চেয়ারপারসনস ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
২০১৮ সালে কারাবরণ, হাসপাতালে চিকিৎসার পর এই প্রথম ব্রিটিশ হাইকমিশনার ফিরোজায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাতে এলেন।
প্রায় দেড় মাস এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ২১ আগস্ট ফিরোজায় ফেরেন খালেদা জিয়া।