ভারত অধিকৃত কাশ্মিরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার পেছনে মূল অভিযুক্তকে হত্যা করার দাবি করেছে ভারতের সেনা কর্তৃপক্ষ।
১৪ ফেব্রুয়ারি যেখানে মূল হামলা হয়েছিল, তার কাছাকাছি পিঙ্গলান গ্রামে একটি বাড়িতে কয়েকজন স্বাধীনতাকামী ব্যক্তি লুকিয়ে আছে, এই খবর পাওয়ার পরপরই রোববার রাতে সেখানে অভিযান চালায় সিআরপিএফ সদস্যরা। লুকিয়ে থাকা ব্যক্তিরাও পাল্টা গুলি চালালে সেখানে এক মেজরসহ নিরাপত্তাবাহিনীর চার সদস্য নিহত হয়। এ সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন বেসামরিক লোকও নিহত হয়।
প্রথম পর্যায়ে জানা গিয়েছিল, হতাহতের পরও ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা কাউকে আটক করতে পারেনি। এমনকি কোনো প্রকার ক্ষতির কথাও জানা যায়নি। বরং নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, বিদ্রোহী ওই কয়েকজন সদস্য পালিয়ে গেছে।
গত বৃহস্পতিবার যে জায়গায় হামলা হয়েছিল, তার আট কিলোমিটারের মধ্যেই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গভীর রাতে শুরু হওয়া এ গোলাগুলি চলে সকাল নয়টা পর্যন্ত। এতে নিরাপত্তাবাহিনীর চারজন সদস্য নিহত হয়। তারা হলেন, মেজর ডি এস দোন্ডিয়াল, হেড কনস্টেবল সেভ রাম, অজয় কুমার ও হরি সিং।
তবে পরে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই লড়াইয়ে জয়েশ-ই মোহাম্মদের দুই সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। এদের একজন আবদুর রশিদ গাজী ওরফে কামরানকে পুলওলামা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী বলে দাবি করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে আরো বলা হয়, কামরান ছিলেন জয়েশ-ই মোহাম্মদের একজন কমান্ডার। নিহত অপরজনের নাম হিলাল, তিনি পুলওয়ামারই অধিবাসী।
ভারত দাবি করছে, কামরান পাকিস্তানের নাগরিক এবং পুলওয়ামা হামলার পরিকল্পনা সেই করেছিল। আফগান যুদ্ধে অংশ নেয়া এই ব্যক্তি বিস্ফোরক তৈরিতে বিশেষজ্ঞ। পুলওয়ামায় আত্মঘাতি হামলাকারী আদিলকেও তিনিই প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়া তাদের প্রতিবেদনে জানায়, এ বছরের ৩ জানুয়ারি তারা জানিয়েছিল, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর পাকিস্তানের জয়েশ-ই মোহাম্মদের শীর্ষ একজন কমান্ডার সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে প্রবেশ করেছে এবং পুলওয়ামায় লুকিয়ে আছে। প্রতিবেদনে কামরানকে জয়েশ-ই মোহাম্মদের শীর্ষ নেতা মাওলানা মাসুদ আজহারের বিশ্বস্ত অনুচর হিসেবেও আখ্যা দেয়া হয়।
ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর এ সময় ওই গোষ্ঠীর একটি ঘাঁটিও ধ্বংস করে দিয়েছে বলে জানানো হয়।
পুলওয়ামা হামলার পরই নরেন্দ মোদী হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ভারত এর প্রত্যুত্তর দেবে। আর এজন্য ভারতের সেনাবাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।
এমনকি ভারতের পক্ষ থেকে এ জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে বিভিন্ন চাপও দেয়া হয়। অবশ্য পাকিস্তান এ অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া