সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের লাঞ্ছনা এবং এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশ।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনের করিডোরে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।এসময় তারা তিনটি দাবি উপস্থাপন করেন। এদিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো বাস্থবায়নে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা।
দাবি তিনটি হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগ, দোষীদের শাস্তির আওতায় নেয়া এবং ঘটনার কোনো সুরাহা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের পদত্যাগ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, খুবই লজ্জাজনক ঘটনা যে শিক্ষককে ছাত্রের দ্বারা লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। একজন শিক্ষকের রুমে একজন ছাত্রনেতা ও তার অনুসারীরা বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে। পরে শিক্ষকের উপস্থিতিতে একজন ছাত্রকে মারধর করা হয়। শিক্ষকরা বাধা দিতে গেলে শিক্ষকদের উপরও হাত তোলা হয়। এমন ঘটনা বাকৃবির ইতিহাসে আগে ঘটে নাই। এমন ঘটনা জানার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি নিরবতা বজায় রেখেছে। আমরা মনে করি প্রক্টরিয়াল বডি তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ। দোষীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দিতে না পারলে তার পদত্যাগ করা উচিত। ছাত্রলীগকে বিতর্ক করার গোপন ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচনের আগে এ সকল ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। শিক্ষকদের সাথে ঘটে যাওয়া এমন ঘটনায় শিক্ষক সমিতি এখনো নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে চলেছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিবাদ লিপিও তারা দেয়নি। এমন সমিতি থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। শিক্ষক লাঞ্ছনা এবং মারধরের ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসন পদত্যাগ করুক।
এসময় তারা, আজ (বুধবার) শিক্ষক সমিতির অভিষেক ও বাজেট সভা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেন। এবং সকল শিক্ষককে ওই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার আহবান করে পাশে থাকার অনুরোধ করেন।
মানববন্ধনে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলাম, সাংগাঠনিক সম্পাদক ড. তানভীর রহমান, সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, উপদেষ্টা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান এবং প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. হামিদুল ইসলামসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
জানা যায়,অনুমতি ছাড়া জোরপূর্বক শিক্ষকের কক্ষে প্রবেশ করে ড. পূর্বা এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারিকে লাঞ্ছিত করা হয়। একই সাথে ভেটেরিনারি অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আফতাব দূর্বারকে মারধর করা হয়। পরে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে চিকিৎসার জন্যে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।