সাড়ে ৪ বছর আগে চাঞ্চল্যকর ৯ বছরের শিশু পরশমনি হত্যাকাণ্ডের ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে নেত্রকোনার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেন্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান নেত্রকোনা পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহীনুর কবির।
এ ঘটনায় নিহত পরশমনি নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার গোবিন্দশ্রী ইউনিয়নের কদমশ্রী গ্রামের হাবিবুর রহমানের বড় মেয়ে। ঘটনার সময় তার বয়স ছিল ৯ বছর।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শাহীনুর কবির বলেন, ২০১৮ সালের ১৪ এপ্রিল বিকেলে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় পরশমনি। পরদিন ভোরে একই গ্রামের বুলবুল চৌধুরীর বাড়ির সামনের বিলের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা হয়। পরে নিহতের মা শাহীনুর আক্তার বাদী হয়ে ওই বছরের ১১ আগষ্ট অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। প্রথমে মদন থানা ১ বছরের বেশি সময় তদন্ত করে। পরে নেত্রকোনা সিআইডি ১ বছরের বেশি সময় তদন্ত করেও হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করতে না পেরে ২০২০ সালে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। এরপর বাদীর নারাজীর প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত নেত্রকোনা পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
নেত্রকোনা পিবিআইয়ের ইউনিট ইনচার্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবিরের সার্বিক সহযোগিতায় তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. নূরুল ইসলাম খান তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলাটি তদন্ত করেন। পরে ২৪ ডিসেম্বর নেত্রকোনা জেলা শহর থেকে ওই গ্রামের মৃত হামিদুর রহমানের ছেলে সন্ধিগ্ধ জোবায়েরকে (২৩) গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর ২৫ ডিসেম্বর তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জোবায়ের আদালতকে জানায়, ঘটনার দিন বিকেলে পরশমনিকে খেলার ছলে তিনি জনৈক জুয়েলের বাড়ির ঝোপের আড়ালে নিয়ে যান। সেখানে তার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে চাইলে সে চিৎকার শুরু করে এবং বাড়ির লোকজনকে জানানোর কথা বলে। তখন জোরে থাপ্পড় মারলে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। এ সময় ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার শঙ্কায় গলায় চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যা করা হয়। এরপর গভীর রাতে তার মরদেহ ঝোপের আড়াল থেকে বিলের পড়ে ফেলে দেওয়া হয়।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পরে বিজ্ঞ বিচারক জোবায়েরের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।