মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যুক্তরাজ্যসহ অ্যামেরিকার ইউরোপীয় মিত্রদের উচিত আটক হওয়া আইএস যোদ্ধাদের ফিরিয়ে নিয়ে তাদের বিচারের সম্মুখীন করা।
আইএস’এর বিরুদ্ধে চলা সবশেষ যুদ্ধে ৮০০ জনের বেশি আইএস যোদ্ধা যৌথ বাহিনীর হাতে ধরা পরেছে।
ইরাক-সিরিয়া সীমান্তের বাঘুজ অঞ্চলে আইএস যোদ্ধাদের শেষ ঘাঁটিতে মার্কিন সমর্থিত কুর্দিশ বাহিনীর হামলা চলার সময় এমন টুইট করলেন ট্রাম্প।
আইএস যোদ্ধাদের সম্পর্কে যা বলেছেন ট্রাম্প
টুইটে ট্রাম্প লিখেছেন, “এই আইএস যোদ্ধাদের ইউরোপেই যাওয়ার কথা আর সেখানে তারা ছড়িয়ে পড়ুক, তা যুক্তরাষ্ট্র চায় না। অন্যরা যে কাজ করতে সক্ষম তা সম্পন্ন করতে প্রচুর অর্থ ও সময় ব্যয় করি আমরা।”
অন্যথায় আটককৃত আইএস সৈন্যদের মুক্ত করে দিতে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্য হবে বলে লেখেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারাও রোববার সানডে টেলিগ্রাফ পত্রিকাকে বলেছেন যে, তাদের আশঙ্কা আটক হওয়া সৈন্যদের বিচারের আুতাধীন করা না হলে তারা ইউরোপের জন্য হুমকি হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থার পররাষ্ট বিষয়ক প্রধান অ্যালেক্স ইয়ঙ্গার শুক্রবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে সিরিয়ায় পরাজিত হতে থাকলেও নতুন করে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপ।
জিহাদিরা দক্ষতা অর্জন করে অন্যান্য উগ্রবাদীর সাথে সম্পৃক্ততা নিয়ে ইউরোপে ফিরে এসে সেখানকার নিরাপত্তাকে আরো বেশি হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মি. ইয়ঙ্গার।
ট্রাম্পের এই টুইট এমন সময় এলো যখন বাংলাদেশী বংশদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক শামীমা বেগম, যিনি আইএস যোগ দিতে যুক্তরাজ্য ছেড়ে গিয়েছিলেন, যুক্তরাজ্যে ফেরার আবেদন করেছেন।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে বাংলাদেশী অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এলাকা থেকে আরো দুজন বান্ধবী সহ শামীমা বেগম আইএসে যোগ দিতে সিরিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।
শামীমা বেগম একটি ছেলে শিশুর জন্ম দিয়েছেন বলে তার পরিবারের আইনজীবী জানিয়েছেন।
ব্রিটেন থেকে যে কয়েকশ মুসলিম ছেলে-মেয়ে আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া ও ইরাকে গিয়েছিল, তাদেরকে ফিরে আসতে দেয়া উচিৎ কি উচিৎ নয়- তা নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে।
ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে ফিরে আসছে কত সংখ্যক আইএস যোদ্ধা
লন্ডনের কিংস কলেজের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্যা স্টাডি র্যাডিকালাইজেশনের এক গবেষণা অনুযায়ী, পশ্চিম ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের মত দেশগুলো থেকে প্রায় ৬ হাজার নাগরিক ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে সিরিয়া ও ইরাকে পাড়ি দিয়েছিল।
ঐ গবেষণা অনুযায়ীক পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোতে প্রায় ১৮০০ জনের মতো আইএস যোদ্ধা এখন পর্যন্ত ফিরে এসেছে।
আইএস পতনরে দ্বারপ্রান্তে থাকলেও জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী এখনো ইরাক ও সিরিয়ায় ১৪ হাজার থেকে ১৮ হাজার সৈন্য রয়েছে তাদের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো ফেরত আসা এই নাগরিকদের অপরাধের তদন্ত, ঝুঁকি মূল্যায়ন, বিচার এবং পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
২০১২ সালের পর থেকে সিরিয়া ও ইরাকে জন্ম নেয়া শিশুদের যারা এই আইএস যোদ্ধাদের সাথে ইউরোপে প্রবেশ করার উদ্যোগ নিচ্ছে, তাদের প্রত্যেকের ঘটনা আলাদা আলাদা করে যাচাই করারও উদ্যোগ নিচ্ছে দেশগুলো।
সূত্র : বিবিসি