ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট দাসপ্রথা এবং দাস ব্যবসায় নেদারল্যান্ডসের ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য সোমবার তার সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছেন।
‘আজ আমি ক্ষমাপ্রার্থী’ এই শিরোনামে শুরু করা প্রধানমন্ত্রী মার্কের ভাষণটি প্রায় ২০ মিনিট স্থায়ী ছিল। আমন্ত্রিত দর্শকরা নীরব থেকে মৌন সম্মতি দিয়ে তার এই ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বাগত জানায়।
জার্মান সম্প্রচারকারী ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, ডাচ মন্ত্রীরা এই অনুষ্ঠানের জন্য সাবেক ডাচ উপনিবেশগুলোতে ভ্রমণ করেছেন।
সমস্ত সাবেক উপনিবেশ এবং সক্রিয় কর্মী গোষ্ঠীগুলো যেভাবে অনুষ্ঠানটি করা হয়েছে সে সম্পর্কে তারা খুশি নয়। তারা বলেছে, এটিতে ‘একটি ঔপনিবেশিক অনুভূতি’ রয়েছে এবং এ অনুষ্ঠান সম্পর্কে তাদের সাথে পরামর্শ করা হয়নি। সক্রিয় কর্মী গোষ্ঠীগুলোর দাবি ছিল আগামী বছরের ১ জুলাই ‘দাস প্রথার সমাপ্তি’র ১৫০ বছর পূর্তি দিবসে অনুষ্ঠানটি করার।
কেনো এত তাড়াহুড়ো নিয়ে ভাষণটি দিতে হলো সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মার্ক তার ভাষণে বলেন, ‘আমরা জানি সবার জন্য কোনো ভালো মুহূর্ত নেই, প্রত্যেকের জন্য কোনো সঠিক শব্দ নেই, প্রত্যেকের জন্য কোনো সঠিক জায়গা নেই।’
তিনি আরো বলেন, নেদারল্যান্ডস সরকার এবং এর প্রাক্তন উপনিবেশগুলোতে দাসত্বের উত্তরাধিকার মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি তহবিল প্রতিষ্ঠা করবে।
ডাচ সরকার এর আগে দাসপ্রথায় জাতির ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেছিল। নেদারল্যান্ডস সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ এখন ক্ষমা চাওয়ার সমর্থন করে।
ডাচরা প্রায় ৬ লাখ আফ্রিকানকে প্রধানত ক্যারিবিয়ান এবং দক্ষিণ আমেরিকায় দাস হিসেবে কাজ করার জন্য পাচার করেছিল।
ফ্রি ইউনিভার্সিটি অফ আমস্টারডামের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ইতিহাসের অধ্যাপক পেপিজন ব্র্যান্ডন বিবিসিকে বলেছেন, ‘নেদারল্যান্ডস ইউরোপীয় সমাজগুলোর মধ্যে অন্যতম যাদের দাসপ্রথার সাথে সবচেয়ে প্রত্যক্ষ এবং ব্যাপক সম্পর্ক ছিল।’
বিবিসি অনুসারে, সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অশ্বেতাঙ্গ কর্মকর্তারা বর্ণবাদী মন্তব্যের শিকার হয়েছেন এবং তারা পদোন্নতির ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়েছেন। বিবিসি জানায়, প্রতিবেদনে আরো দেখা গেছে, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে আফ্রিকান দেশগুলোকে ‘বানরের দেশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা