রাজশাহীর সাধারণ মানুষ বিএনপির সমাবেশকে প্রত্যাখান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
শনিবার বিকেলে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যাহত ও বিএনপি’র দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন তিনি।
এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আজকে রাজশাহীতে যে সমাবেশ বা মহাসমাবেশ বিএনপি আহŸান করেছিল। যার জন্য গত কয়েকদিন থেকে তাদের নানা রকম প্রচার-প্রচারণা ছিল, প্রচুর লোক হবে, কয়েক লক্ষ মানুষ ও নেতাকর্মী সমবেত করবে। এক্ষেত্রে বিএনপি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। কারণ মাদ্রাসা মাঠটিতে খুব বেশি মানুষ লাগে না, সেখানে প্রায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ হলে মাঠটি কানায় কানায় ভরে যায়, আশেপাশে রাস্তা মিলে ৫০ হাজার মানুষ লাগে পূর্ণ হতে। আমরা ড্রোনে তোলা ছবিতে দেখেছি, বিএনপির সমাবেশের মাঠটি ফাঁকা ফাঁকা। তাদের দলের নেতাকর্মী যারা বাইরে থেকে এসেছেন, তারা হয়তো ছিলো, কিন্তু স্থানীয় নেতাকর্মীরা হয়তো সেইভাবে অংশ নেননি। সাধারণ মানুষের যাওয়ার তো বাস্তবতা নেই, অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। সাধারণ মানুষ এই ধরনের আন্দোলন, সরকারর পতনের অগণতান্ত্রিক ঘোষণার সঙ্গে সাধারণ মানুষ থাকবে না এটাই স্বাভাবিক। সেই কারণে আমি মনে করি এই সমাবেশ ফ্লপ হয়েছে। বিএনপির কতিপয় নেতাকর্মী ছাড়া সাধারণ মানুষ সমাবেশ প্রত্যাখান করেছে।
শনিবার কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। বেলা আড়াইটায় শুরু হয়ে সমাবেশ চলে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। সঞ্চালনা করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার।
প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি রাজশাহীতে সেমিফাইনাল খেলার ঘোষণা দিয়ে এসেছিল। কেন তারা রাজশাহীতে সেমিফাইনাল খেলার জন্য পছন্দ করলো সেটি আমারও প্রশ্ন। তারা হয়তো মনে করছেন, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট ইত্যাদি তাদের সেই আগের ঘাঁটি টায় থেকে গেছে। যেখানে তাদের প্রার্থীরা দাঁড়ালে ধানের শীষে মানুষ ভোট দিয়ে জিতে দেয়। কিন্তু উনারা জানেন না, গত ১৪ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার এই সময়কালে রাজশাহীর পাশ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা নদী দিয়ে অনেক মিলিয়ন কিউসেক পানি প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পৌছে গেছে। ওই পানি যাওয়ার সময় বিএনপি-জাতীয়তাবাদী যারা ছিল, তাদের অনেককে টেনে নিয়ে চলে গেছে। এটি এখন আর বিএনপির ঘাঁটি নয়। যদি তাই হতো তাহলে আজকে সমাবেশের মাঠের এই করুণ অবস্থা হতো না।
বিএনপি উন্নয়নকে সহ্য করতে পারছে না উল্লেখ করে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি দেশের উন্নয়নকে সহ্য করতে পারছে না। একটার পর একটা উন্নয়ন হয়েই যাচ্ছে। আর কয়েকদিন পর কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হবে। এভাবে উন্নয়ন চলতেই থাকবে এবং আরো নতুন করে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিতে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদের চক্রান্ত, দেশের বাইরে থেকে চক্রান্ত, অর্থনৈতিক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলা করছেন, একই সঙ্গে সম্মেলন করে, নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করে দলকে গোছাচ্ছেন, আবার একই সঙ্গে উন্নয়নের কাজ করছেন। দেশকে কাঙ্খিত জায়গায় পৌছে নিয়ে যাচ্ছেন, জনগণের কল্যান করে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আগামী নির্বাচনেও অনেক চক্রান্ত হবে, আবারো কালো টাকা ছড়িয়ে দেয়া হবে, প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হবে, মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হবে, নৌকা মার্কাকে ভোট না দেওয়ার জন্য নানা চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করা হবে, কিন্তু ২০২৪ সালে নৌকায় জিতে যাবে ইনশাল্লাহ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আবারো প্রধানমন্ত্রী হয়ে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য আখতার জাহান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, সহ-সভাপতি নাইমুল হুদা রানা, ডা. তবিবুর রহমান শেখ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, মীর ইসতিয়াক আহম্মেদ লিমন, প্রচার সম্পাদক দীলিপ কুমার ঘোষ,কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফ.ম.আ জাহিদ, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. মুসাব্বিরুল ইসলাম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক রবিউল আলম রবি, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ইয়াসমিন রেজা ফেন্সি, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ফিরোজ কবির সেন্টু, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মকিদুজ্জামান জুরাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক পংকজ দে, উপ-প্রচার সম্পাদক সিদ্দিক আলম, মহানগর শ্রমিক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওয়ালী খান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শরীফ আলী মুনমুন, মহানগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী,মহানগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, সাধারণ সাকির হোসেন বাবু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার, মহানগর যুব মহিলা লীগের সভাপতি এ্যাড. ইসমত আরা, সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন নিলু, মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিয়াম, সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবিন সবুজ, মহানগর তাতী লীগের সভাপতি আনিসুর রহমান আনার, সাধারণ সম্পাদক মোকসেদ উল আলম সুমন, সহ মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।#