সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার অভিযোগ থেকে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে রেহাই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুবরাজের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে মামলাটি করেছিলেন খাশোগির বাগদত্তা হেতিজে চেঙ্গিস।
সৌদি শাসকদের সমালোচক খাশোগিকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করা হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের জন্য সৌদি যুবরাজকে দায়ী করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্রগুলো বলে, তারা বিশ্বাস করে যুবরাজই ওই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা।
কিন্তু আদালতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মোহাম্মদ বিন সালমান যেহেতু এখন সৌদি আরবের প্রধানমন্ত্রী, তাই তিনি এ মামলা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
এ ঘটনায় করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, সৌদি নেতৃত্ব ও তার কর্মকর্তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ও গণতন্ত্রের সমর্থক জামাল খাশোগিকে অপহরণ করে আটকে রেখে মাদক প্রয়োগ ও নির্যাতন করে হত্যা করেছেন।
এ ঘটনার পর খাশোগির বাগদত্তা হেতিজে চেঙ্গিস টুইটারে লিখেছেন, ‘এ দায়মুক্তির মধ্য দিয়ে খাশোগির আবার মৃত্যু হলো।’
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ডও এ দায়মুক্তির সমালোচনা করেছেন।
মার্কিন বিচার বিভাগের আইনজীবীরা বলছেন, একটি বিদেশী সরকারের বর্তমান প্রধান হিসেবে সৌদি যুবরাজ মার্কিন আদালতের বিচারের আওতা থেকে রেহাই পাবেন। রাষ্ট্রপ্রধানের দায়মুক্তির রীতি প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে সুপ্রতিষ্ঠিত।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র লিখিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের দীর্ঘস্থায়ী নীতি অনুযায়ীই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মামলার অভিযোগের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।’
খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই সন্দেহের তীর ছিল সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দিকে। কারণ, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানসহ সৌদি আরবের শাসকগোষ্ঠীর কঠোর সমালোচক ছিলেন খাশোগি। এ নিয়ে তিনি বেশ কিছু লেখা লিখেছেন ওয়াশিংটন পোস্টে। বিভিন্ন তদন্তে এ হত্যাকাণ্ডে নির্দেশদাতা হিসেবে উঠে এসেছে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নাম।
২০১৭ সালে প্রিন্স মোহাম্মদকে তার বাবা বাদশা সালমান যুবরাজ হিসেবে ঘোষণা করেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। তবে তিনি বরাবরই খাশোগি হত্যাকাণ্ডে তার কোনো ভূমিকা নেই বলে দাবি করে আসছেন।
সূত্র : বিবিসি