পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে জনগণের উত্তাল তরঙ্গে সরকার ভেসে যাবে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে দুর্ভিক্ষ আসবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে অনুষ্ঠিত কৃষক দলের ‘কৃষক সমাবেশে’ তিনি এসব কথা বলেন।
সার, বীজ, ডিজেল, কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম কমানো এবং কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য, বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো প্রত্যাহারের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি দুর্ভিক্ষের কথা বলেছেন। দুর্ভিক্ষতো আসবে, গত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে। এখনো সময় আছে নিরাপদে প্রস্থান করুন। তা না হলে রেহাই নেই।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে কৃষকদের কোমর ভেঙে দিয়েছে। কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে ৫০ গুণ। বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১০ গুণ। তাহলে এখন কৃষকরা কোথায় যাবে? তাই শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে।
সমাবেশ থেকে ফিরে গিয়ে কৃষকদের গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালের মতো তাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) আর সুযোগ দেয়া হবে না। তাই পরিষ্কার করে বলছি, এখনি পদত্যাগ করে সংসদ বিলুপ্ত করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে একটি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নইলে জনগণের উত্তাল তরঙ্গে এই সরকারকে ভেসে যেতে হবে।
কৃষক দলের সাবেক সভাপতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, সরকার কৃষকের জন্য কোনো কাজই করছে না। কৃষি কাজের সব উপকরণের দাম বাড়িয়েছে। অপর দিকে চাল-ডাল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে সাধারণ জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলেছে।
তিনি বলেন, আমার নেত্রীকে বন্দী করে রেখেছেন। যদি কথায় কাজ না হয় তাহলে হাতুড়ি নিয়ে আসব, জেলের তালা ভাঙবো, আমার নেত্রীকে বের করব। একটু অপেক্ষা করছি ডাক এলে সারা বাংলাদেশের মানুষ যে নেত্রীকে ভালোবাসে সেই নেত্রীর জন্য ঢাকায় অবস্থান নিবে, নেত্রীকে মুক্ত করবে।
সভাপতির বক্তব্যে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিন বলেন, অবিলম্বে কৃষি উপকরণের দাম না কমালে, সচিবালয়-গণভবন ঘেরাও করা হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমানুল্লাহ আমান, সদস্য সচি আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লিটন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।