টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২২ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিল থ্রি লায়ন্সরা। এই জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাশে বসলো ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে দ্বিতীয়বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতলো ইংলিশরা। আরো একবার ইংল্যান্ডের বিশ্বজয়, আরো একবার জয়ের নায়ক বেন স্টোকস।
সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে কোনো উইকেট না হারানো ইংল্যান্ড এইদিন প্রথম উইকেট হারায় প্রথম ওভারেই। আর পাওয়ার প্লেতেই হারিয়েছে ৩ উইকেট। আগের ম্যাচে হার না মানা ১৭০ রানের জুটি গড়া এলেক্স হেলস ও জশ বাটলার দুজনেই ফিরেছেন এই সময়ে। মাঝে ফিরেম ফিলিপ সল্টও।
টুর্নামেন্ট সেরার দৌড়ে থাকা এলেক্স হেলসকে প্রথম ওভারেই মাত্র ১ রানে ফেরান শাহিন আফ্রিদি। ইংল্যান্ড দ্বিতীয় উইকেট হারায় চতুর্থ ওভারে। এবার ৯ বল থেকে ১০ রান করে হারিস রউফের প্রথম শিকার ফিলিপ সল্ট। আর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে জশ বাটলারকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান হারিস রউফ। আউট হবার আগে বাটলার করেন ১৭ বলে ২৬ রান।
পাকিস্তান চতুর্থ উইকেটের দেখা পায় ১৩তম ওভারে হ্যারি ব্রক ২৩ বলে ২০ রানে ফিরে গেলে। হ্যারি ব্রককে ফিরিয়ে বেন স্টোকের সাথে গড়ে তোলা ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন শাদাব খান। তবে জয়ের পথে আর কোনো ভয় আসতে দেননি স্টোকস-মইন আলি জুটি। তাদের ৩৫ বলে ৪৮ রানের জুটি যখন ভাঙে, জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের প্রয়োজন তখন ১০ বলে ৬ রান। ১২ বলে ১৮ রান করেন মইন আলি।
বেন স্টোকস সেই ওভারেই জয় নিশ্চিত করে ফেলেন, নিশ্চিত করে ফেলেন ইংল্যান্ডের শিরোপা। সেইসাথে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিও তুলে নেন এই অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৪৯ বল থেকে ৫২ রানে।
এর আগে স্যাম কারানের বোলিং তোপে মাত্র ১৩৭ রানেই বাঁধা পড়েছে পাকিস্তান। স্যাম কারানকে যোগ্য সঙ্গই দিয়েছেন আদিল রাশিদ ও ক্রিস জর্ডান। তাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ ৪ ওভারে মাত্র একটি বাউন্ডারির দেখা পায় পাকিস্তান, ৪ উইকেট হারিয়ে আসে মাত্র ১৮ রান। স্যাম কারান ১২ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট। দুটো করে উইকেট পান আদিল রাশিদ ও ক্রিস জর্ডান।
এইদিন বৃষ্টি শঙ্কা মাথায় নিয়েই টসে হেরে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। মেলবোর্নে সাবধানী শুরু বাবর-রিজওয়ানের। ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারি আসে চতুর্থ ওভারে, রিজওয়ানের ব্যাটে। ইংল্যান্ড দল প্রথম উইকেটের দেখা পায় এই রিজওয়ানকেই ফিরিয়ে। পঞ্চম ওভারে স্যাম কারানের শিকার হয়ে ফিরেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ১৪ বল থেকে ১৫ রান আসে এই ওপেনারের ব্যাটে। সেই ওভার থেকে আসে মাত্র ১ রান। ষষ্ঠ ওভারে ১০ রান আসলে পাওয়ার প্লে শেষে সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেটে ৩৯ রান।
দাঁড়াতে পারেননি মোহাম্মদ হারিস, আদিল রাশিদের প্রথম শিকার হয়ে ১২ বলে ৮ রানে ফিরেন হারিস। আদিল রাশিদের দ্বিতীয় শিকার বাবর আজম। ১২ তম ওভারের আউট হবার আগে ২৮ বল থেকে ৩২ রান করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। সেই ওভার মেইডেন দেন আদিল রাশিদ। পরের ওভারেই ইফতেখার ফিরেন রানের মুখ না দেখেই। ৬ বল থেকে ০ রানে বেন স্টেকসের শিকার তিনি। ৮ বল আর মাত্র ১ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় পাকিস্তান।
সেখান থেকে দায়িত্ব নিয়ে দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন শান মাসুদ ও শাদাব খান। তাদের ২৫ বলে ২৩ রানের জুটি ভাঙে ১৭তম ওভারে ২৮ বল থেকে ৩৮ রান করে শান মাসুদ ফিরে গেলে। পরের ওভারে ক্রিস জর্ডানের শিকার শাদাব খান। ১৪ বলে ২০ রান করেন শাদাব। দু’জনে দ্রুত ফিরে গেলে আবারো পথ হারায় পাকিস্তান। শেষ ভরসা মোহাম্মাদ নওয়াজও ফিরেন মাত্র ৫ রানে। শেষ ওভারে ওয়াসিম জুনিয়রকেও হারিয়ে ৮ উইকেটে ১৩৭ রানেই থামে পাকিস্তানের ইনিংস।