বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, রাজশাহীতে বিএনপির জনসভার পরদিন চট্রগ্রামে জনসভা করবেন শেখ হাসিনা। চ্যালেঞ্জ থাকলো পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের সভার তুলনায় বিএনপির রাজশাহীর সভায় লোক সমাগম বেশি হবে। সরকারকে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান বুঝিয়ে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, বিনা ভোটের সরকার দেশকে বিক্রি করে দেয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছে। আগামী বছর দেশে দুর্ভিক্ষ হবে বলে জনগণকে হুঁশিয়ারী দিচ্ছে। কিন্তু আগামী বছর নয়, যেদিন থেকে এই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসেছে সেদিন থেকেই দেশে দুর্ভিক্ষ চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই শুরু হয়েছে নজিরবিহিন লুটপাট। এই লুটপাটের কারণে স্বাধীনতা পরবর্তী তৎকালীন সময়ে দেশে দুর্ভিক্ষ এসেছিল। মানুষ না খেয়ে মরেছে। এখন তারই (বঙ্গবন্ধু) কন্যা দেশে আবারও দুর্ভিক্ষ নিয়ে এসেছে। আ’লীগ সরকার আর কিছুদিন ক্ষমতায় থাকলে দেশের কোটি কোটি মানুষ অনাহারে মরবে।
মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর একটি মিলনায়তনে আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে দলটির বিভাগীয় সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্যুতের নজিরবিহীন লোডশেডিং, জ্বালানি ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দেশব্যাপী বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কয়েকজন নেতাকর্মীকে হত্যার প্রতিবাদে এবং বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে এই গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আর সময় নেই। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে এই সরকারকে বিতাড়িত করতে হবে। সরকারের পতনের লক্ষ্যে আগামী ৩ ডিসেম্বর হবে মূল গণসমাবেশ। আর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় হবে ঘোষণা। এজন্য রাজশাহীর এই সমাবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণসমাবেশকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। পরে তিনি সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মধ্যে দায়িত্ববন্টন ও বিভিন্ন উপ-কমিটি ঘোষণা করেন। এতে বিভাগের আটটি জেলার আহ্বায়ক, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবগণ বক্তব্য রাখেন।
সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। সভার সঞ্চালক ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি শাহজাহান মিয়া, বেগম খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। অন্যদের মধ্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত ও এম ওবায়দুর রহমান চন্দন, সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফা, সাবেক এমপি জাহান পান্না, সাবেক এমপি শামসুল আলম প্রামাণিক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম বাবুসহ দলটির মহানগর ও বিভাগের বিভিন্ন জেলার আহ্বায়ক, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, রাজশাহীতে আগামী ৩ ডিসেম্বর দেশের সবচেয়ে বড় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। একটাই লক্ষ্য, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। শেখ হাসিনার অধীন দেশে আর কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর জনগণ সরকারকে হলুদ কার্ড দেখাবে। আর ঢাকার জনগণ ১০ ডিসেম্বর সরকারকে লাল কার্ড দেখাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।