তখন বিকেল সাড়ে চারটা এমন সময় নগরীর পুরোহিত পাড়ার মানিক মিয়ার স’মিলের সামনে হঠাৎ করে চোখে পড়লো বয়সের ভারে ন্যুয়ে পড়া শতবর্ষী হাজেরা বেওয়া ওরফে হাজু বিবি রাস্তার এককোনায় ছেঁড়া চাদরে শুয়ে রয়েছে দেখে এলাকার মাঝবয়সী কয়েকজন নারী বৃদ্ধা মহিলাটিকে নিয়ে কানাঘুঁষা করছে হাজু বিবি ধোপাখলার হাবিব ও রঞ্জুর মাতা উনাকে রাস্তায় শুয়িয়ে রেখে চলে গেছে সন্তানেরা এটা কেমন, কি করে হয় নেতা বাসা থেকে বেরিয়ে আসলে তাকে জানাবো।
এমন সময় আমি রাস্তা দিয়ে নেতার বাসার দিকে যাচ্ছি যাওয়ার পথে বিষয়টি শুনে ও বৃদ্ধা মহিলাকে দেখে কেন জানি মনে হলো নেতাকে বিষয়টি আমি নিজ থেকেই জানায়, একই এলাকার কয়েকজন মহিলাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনারা উনাকে চিনেন জবাবে তারা বললো উনি আট সন্তানের জননী হাজু বিবি এই বৃদ্ধ বয়সে এমন অবস্থায় রেখে সন্তানেরা বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে গেছে এখন এই বৃদ্ধ মায়ের কি হবে……… ইত্যাদি ।
নগরীর ধোপাখলা এলাকার স্বামীহারা এই বৃদ্ধার অসহায়ত্ব দেখে নিজেকে আর সামাল দিতে পারলাম না। হাজু বিবির অনেক আগেই স্বামী মারা গেলেও ৮ সন্তানের কেউ তার দেখভালের দায়িত্ব নেয়নি। তখন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে নেতা ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য, যুবলীগের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে যিনি আস্থার বাতিঘর, নগরীর যুবসমাজের কাছে জনপ্রিয় নেতৃত্ব, যিনি দলমত নির্বিশেষে অসহায় জনগোষ্ঠীর অতি আপনজন, মেধাবী ও পরিশ্রমী যুবনেতা ইয়াসিন আরাফাত শাওন বাসা থেকে বের হয়ে আসা মাত্রই বিষয়টি আমিসহ আরো কয়েকজন মহিলারা মিলে তাঁকে জানালাম। জানানোর সাথে সাথে যুবনেতা কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করলো তার ছেলেমেয়েরা কোথায় থাকে তাদেরকে দ্রুত খবর দেয়ার জন্য সন্তানদের আসতে বললো।
স্থানীয়রা জানান, ৮ সন্তানের মধ্যে এখন কেউই মায়ের খোঁজখবর নেন না। তাদের মধ্যে দু’একজন মাঝেমধ্যে একটু দেখাশোনা করেন। এক ছেলে ঢাকায় ড্রাইভারী করে স্ত্রী সন্তানসহ সেখানেই থাকে। আর তিন ছেলে ও মেয়েরা আকুয়া চৌরঙ্গীর মোড় এলাকায় থাকে। ধোপাখলায় থাকাকালীন সময়েই এইনের জমি বিক্রি করে দিয়ে সন্তানরা চৌরঙ্গীর মোড় এলাকায় থাকে। আর মেয়েরা যার যার মতো করে স্বামীর সাথে সংসার করছে। এখন আর মায়ের ভরনপোষণের দরকার নেই। মা যেখানে খুশি সেখানে থাকুক আমরা স্বামীর ঘর সংসার করছি আমরা দায়িত্ব নিতে পারুম না, সেই সাথে একই সুরে সন্তানরা-ও সুর মিলিয়ে বলেন আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় থাকবে, তাছাড়া উনাকে দেখাশোনা কে করবে….. ইত্যাদি।
এসব শুনে যুবলীগ নেতা শাওন আকুয়া এলাকার যুবনেতা মাহবুব আলম রাফেলকে বলেন অসহায় বৃদ্ধা হাজু বিবির ছেলে রঞ্জু চৌরঙ্গীর মোড়ে থাকে তাকে যেন দ্রুত আমার কাছে পাঠায়। রাত দশটার দিকে রাফেল বৃদ্ধ মায়ের কলুষিত সন্তান রঞ্জু যুবলীগ নেতা শাওনের কাছে পাঠায়। পরে কলুষিত সন্তান রঞ্জু তার অপরাপর অন্য ভাই বোনদের খবর দিলে তারাও আসে।কিন্তু আসলে কি হবে এখন বৃদ্ধ মা তাদের কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ঘন্টা তিনেক ছেলে মেয়েদের বোজানোর পরও কোন সন্তান তাঁদের বৃদ্ধা মায়ের ভরনপোষণ তো দূরের কথা তাকে একদিনের জন্যও রাখতে রাজি হননি। জোর করে তো আর পীরের মুড়িত হওয়া যায়না, কেউ রাজি হননি তাঁদের বৃদ্ধ মায়ের ভরনপোষণের…..??? এমন কি বৃদ্ধাশ্রমে রাখতেও বলা হয়েছিলো সন্তানদের তাতেও রাজি হননি তারা।
অবশেষে সকলের কথাবার্তা শেষ হওয়ার পর সমাজের নিপীড়িত নির্যাতিত অসহায় আপামর জনসাধারণের হৃদয়ে স্থান পাওয়া নগরের ছাত্র ও যুবসমাজের কাছে জনপ্রিয় নেতৃত্ব ও আস্থার বাতিঘর পরিশ্রমী ও তারুণ্যের শক্তি হিসেবে স্বীকৃত নগর যুবসমাজের আস্থা ইয়াসিন আরাফাত শাওন বয়সের ভারে নূয়ে পড়া শতবর্ষী হাজেরা বেওয়া ওরফে হাজু বিবির সমস্ত ভরনপোষণের দায়িত্ব নিয়ে বললেন আজ থেকে আমৃত্যু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সব দায়িত্ব আমিই নিলাম। আজ একমাস পূর্ণ হলো সেই অসহায় বৃদ্ধা মায়ের ভরনপোষণের দায়িত্ব নেয়া যুবলীগ নেতা শাওন একমাস যাবত দায়িত্ব পালন করছেন অসহায় বৃদ্ধা মায়ের। সমাজের চেনা গন্ডির বাইরের ইতিবৃত্ত ইয়াসিন আরাফাত শাওন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, বৃদ্ধ ও অসহায় মা-বাবার ভরণপোষণ সন্তানের সামাজিক ও নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক, অনেক সন্তানই এ দায়িত্ব পালন করে না। শিক্ষিত ও উপযুক্ত সন্তান থাকার পরও অনেক শিক্ষিত ঘরের বৃদ্ধ ও অসহায় বাবা-মাকে আশ্রয় নিতে দেখা যায় বৃদ্ধাশ্রমে। এর চেয়ে হৃদয়বিদারক ও নিষ্ঠুর আর কিছু হতে পারে না। কাজেই প্রতিটি সন্তানের উচিত বৃদ্ধ মা-বাবার দেখাশোনা ও ভরণপোষণ করা এবং তাদের সঙ্গ দেওয়া। সর্বশেষ মহানগর আওয়ামী যুবলীগের এ নেতা সকলের কাছে দোয়া ও সহমর্মিতা কামনা করেছেন যেনো মৃত্যুর আগ মূহুর্ত পর্যন্ত সমাজের প্রতিটি ভালো কাজের অংশীদার হতে পারি।