নামাজ পড়তে গিয়ে ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাংলাদেশি

সড়ক দূর্ঘটনায় ওমানের ইবরির আল জুবাইয়া নামক স্থানে নিহত হয়েছেন বাংলাদেশী মোঃ কামাল কাজি (৪০)। তিনি লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের রুহুল আমিন কাজির ছেলে।

শুক্রবার (২১ অক্টোবর) স্থানীয় সময় জুমার নামাজ পড়তে সাইকেলযোগে যাওয়ার পথে গাড়িচাপায় মারা যান তিনি। মাত্র ৮ মাস আগে ওমানে যান কামাল। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

বার বার কান্না করে অচেতন হয়ে পড়ছেন নিহতের স্ত্রী জোসনা বেগম (৩৫)। কাঁদছেন সন্তান নাজমা আক্তার (১৮), আসমা বেগম (১৬), ফয়সাল হোসেন (১৪), পারভেজ হোসেন (১২)। সবার কান্নায় তাকিয়ে থাকছে একমাত্র ছোট্ট সন্তান ইয়ামিন (৮)। বড় ছেলেকে হারিয়ে অজোরে কাঁদছেন বাবা রুহুল আমিন কাজি (৬৫) ও মা হাছিনা বেগম (৫৫)।

রোববার (২৩ অক্টোবর)-নিহতের ছোট ভাই ওমান প্রবাসী আমীর কাজি মোবাইল ফোনে জানান, ওমান পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ইবরির সরকারি হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ওমানিকে গ্রেফতার করা হয়। এ পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। রোববার ওমানি স্পন্সরসহ আমাকে থানায় যেতে বলেছে। ভাই এখানে নতুন হওয়ায় আমি ছায়ার মতো তাঁকে আগলে রাখতাম। নামাজ পড়তে গিয়ে তিনি লাশ হয়ে যাবেন কখনোই ভাবিনি। ভাইয়ের লাশ বহন করে দেশে পাঠাবো, ভাবতেই কষ্টে বুক ফেটে যায়।

কামাল কাজির স্ত্রী জোসনা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমাদের কষ্টের আর সীমা নেই। সুখের আশায় স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে আজ তাঁকেও হারালাম। গরীবের কষ্টের ভার আরোও বেড়ে গেলো। কাছে থাকলে লাশটি অন্তত: ছুঁয়ে শান্তনা পেতাম। কিন্তু কবে সেই সুযোগ পাবো সেটিও অনিশ্চিত।

রুহুল আমিন কাজি বলেন, দেশে থাকতে আমার ছেলে খুব কষ্ট করেছে। সংসারের ব্যয় মেটাতে দিন মজুর হিসেবে যখন যে কাজ পেয়েছে তা করেছে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে তাকে মাত্র ৮ মাস আগে ওমান পাঠাই। ভেবেছিলাম ছেলেটি সন্তানসহ বাকি জীবন সুখে কাটাতে পারবে। আমার সেই অনেক আদরের মানিক আজ বিদেশের মর্গে পড়ে আছে। সন্তানকে হারিয়ে বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। স্ত্রী সন্তানদের মুখের দিকে তাকাতে পারছিনা।

Share this post

scroll to top