বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার (১৫ অক্টোবর) ময়মনসিংহে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তবে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দলটিকে নির্ধারিত মাঠের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ অভিযোগ করেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি, জ্বালানী তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের গুলিতে বিএনপি কর্মীদের হত্যা, হামলা ও মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। শনিবার (১৫ অক্টোবর) এ সমাবেশ করার কথা রয়েছে দলটির।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা কারো শত্রু না, আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। কারো সঙ্গে আমাদের দ্বন্ধ নেই। আমরা শান্তির্পূণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে সমাবেশ করতে চাই। এ জন্যে আমরা প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সংবিধানের সবটুকু অধিকার আমরা পেতে চাই।’
সভায় নজরুল ইসলাম খান আরও অভিযোগ করে বলেন, ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে সমাবেশ আয়োজনের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে ৬ অক্টোবর লিখিতভাবে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তাঁরা সমাবেশে সহযোগিতা করবে। তবে এখনো পর্যন্ত সার্কিট হাউস মাঠে সমাবেশ করার কোনো অনুমতি দেয়নি।
এসময় তিনি জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সব বাঁধা অতিক্রম করে নিজ দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করুন।’
আওয়ামী লীগের পাল্টা সমাবেশ আয়োজনের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘শুনেছি আমাদের সমাবেশের আগের দিন আজ ও কাল শনিবার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দুটি পৃথক সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমরা অনেক দিন আগে আমাদের সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছি। সেটি প্রচার হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সমাবেশ ডাকা মানে “উসকানি দেওয়া”। যেহেতু আমরা আগে সমাবেশ ডেকেছি, তাই মাঠের ব্যাপারে আমরা সুযোগ পাওয়ার অধিকার রাখি।’
সভায় নজরুল ইসলাম খান আরও বলেন, গত বুধবার চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ হয়েছে। সেখানে তিন দিন আগেই মাঠের অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন। ২২ অক্টোবর খুলনায় বিভাগীয় সমাবেশ। সেখানেও ইতিমধ্যে মাঠের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাহলে ময়মনসিংহে কেন দেওয়া হচ্ছে না! সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে পরিবরহন মালিকদের বলা হচ্ছে, যেন বিএনপির নেতা-কর্মীদের যেন সমাবেশে আসতে না দেওয়া হয়। তবে শত বাধা উপেক্ষা করে, পায়ে হেঁটেও হলেও মানুষ সমাবেশে আসবে।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন, শরীফুল আলম, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু ওয়াহাব আকন্দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাকির হোসেন বাবলু, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক এনায়েতউল্লাহ কালম ও যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ জেলা ও মহানগর বিএনপি’র নেতা কর্মীরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিভাগীয় সমাবেশ আয়োজক কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ইমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর প্রশাসনের কাছে সার্কিট হাউস মাঠের ব্যাপারে আবেদন করা হয়েছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত পায়নি। তবে সমাবেশ করার ব্যাপারে সহযোগীতা করা হবে বলে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূইয়া বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিএনপির সমাবেশ করার কোনো আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হলে সমাবেশের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’