আজ ১২ই রবিউল আউয়াল। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। ১৪৪৪ বছর আগের এই দিনে আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে বিশ্বমানবতার মুুক্তির দূত বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩ বছর পর একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তাই মুসলিম উম্মাহ্র জন্য আজকের এ দিনটি যেমন আনন্দের, তেমনি শোকের। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য নানা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইতিহাসের এক অতুলনীয় আদর্শ। পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে আজ বাংলাদেশে সরকারি ছুটি।
বর্বর আরব সমাজে তার আবির্ভাব বদলে দিয়েছিল গোটা সমাজব্যবস্থাকে। মানবতার মুক্তির দূত হয়ে তিনি আরব সমাজের পাশাপাশি গোটা পৃথিবীর মানুষের জন্য নিয়ে এসেছিলেন শান্তির অমোঘ বার্তা। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে অন্য ধর্মাবলম্বী অনেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী বিখ্যাত পণ্ডিত মাইকেল এইচ হার্ট তার বহুল আলোচিত ‘দ্য হান্ড্রেড’ গ্রন্থে হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে স্থান দিয়েছেন। মহানবী (সা.)কে বলা হয় সাইয়্যিদুল মুরসালিন।
অর্থাৎ, সব নবী ও রাসুলের নেতা। তিনি নিখিল বিশ্বের নবী। তার জন্মের সময় আরব দেশ অশিক্ষা, অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও ঘোর তমসায় নিমজ্জিত ছিল। এ কারণে ওই সময়কে বলা হয় ‘আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারের যুগ’। ওই বর্বর যুগে পৈশাচিক স্বভাবের কালিমাতে মানুষের মানবিক গুণাবলির অপমৃত্যু ঘটেছিল। সে অবস্থা থেকে মানব জাতিকে মুক্তি দিতে মহান আল্লাহ্ হযরত মুহাম্মদ (সা.)কে সর্বশেষ রাসুল হিসেবে পৃথিবীতে পাঠান। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ্ বলেছেন, ‘আমি আপনাকে সারা বিশ্বের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।’ মহান আল্লাহ্ পুরো মানবজাতির জন্য সর্বাপেক্ষা কল্যাণকর, পরিপূর্ণ জীবন বিধান সংবলিত পবিত্রতম আসমানি কিতাব ‘আল-কোরআন’ নাজিল করেন মহানবী (সা.)-এর ওপর। প্রতিবছর ১২ই রবিউল আউয়ালকে গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে পালন করে মুসলিম বিশ্ব। বিশ্বজুড়ে পালিত হয় মিলাদ, জশনে জুলুসসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান।