জরিমানাও গুণতে হচ্ছে মাহমুদুল্লাহকে

আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে নিউজিল্যান্ড পেসার ট্রেন্ট বোল্ট এবং বাংলাদেশ অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহকে জরিমানা করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। শনিবার ক্রাইস্টচার্চে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে খেলার আচরণ বিধি ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে।

বোল্টকে ‘অশ্লীল ভাষা’ ব্যবহারের জন্য ম্যচ ফি’র ১৫ শতাংশ এবং আউট হওয়ার পর ব্যাট ছুড়ে মারার অপরাধে মাহমুদুল্লাহকে ১০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে বলে আইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আর্থিক জরিমানা ছাড়াও উভয় খেলোয়াড়কে একটি করে ডিমেরিট পয়েন্ট দেয়া হয়েছে। প্রথমবার এ ধরনের অপরাধ করায় মাত্র একিটি ডিমেরিট পয়েন্ট দেয়া হয়েছে।

তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড। তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার ডানেডিনে।

ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কথাই মাশরাফির মুখে
ক্রীড়া প্রতিবেদক
কী বলবেন মাশরাফি? কী-ই বা বলার আছে তার। এমন পরাজয়ের পর একজন অধিনায়ক হিসেবে কিছুই যে বলার থাকে না। হোম কন্ডিশনে সব দলই প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে। সেটি নিউজিল্যান্ড কেন, ভারত, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশও কী কাউকে ছেড়ে দেয়? কিন্তু সেটি যদি লড়াইয়ের মতো লড়াই করে হেরে যাওয়া হয়, তাতে থাকে অনেক পজেটিভ দিক। বাংলাদেশের পরাজয়ে তো অসহায়ত্বও প্রকাশ পাচ্ছে। এ সিরিজে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবেও দেখা হচ্ছিল। কিন্তু এমন হারে ব্যাটিং নিয়ে তো রীতিমতো দুশ্চিন্তা বেড়ে গেল। ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাস, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীমদের ব্যাটে রান আসার কথা। দু’টি ম্যাচেই এরা সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ।

টুকটাক রান করছেন কেউ না কেউ। কিন্তু সেটি কী আমলে নেয়ার মতো? নিউজিল্যান্ডের ওপেনার গাপটিল ইনজুরি থেকে ফিরে দুই ম্যাচেই করলেন সেঞ্চুরি। এমন ব্যাটিং করার দক্ষতা বাংলাদেশ দলেও তো আছে। কিন্তু তাদের কী অবস্থা। নিউজিল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে যে কখনো তারা খেলেনি এমন নয়। অভিজ্ঞতাও কারো কম না। কিন্তু দায়িত্বশীলদের এমন ধারাবাহিক ব্যর্থতার জবাব কী। ম্যাচ শেষে মাশরাফি বলেন, ‘এমন ম্যাচে ২৭০-২৮০ রান করলে লড়াই করা সম্ভব। কিন্তু সেখানে আমাদের হচ্ছে ২২০-২৩০ এর মধ্যে।’ এমন স্কোর দিয়ে কী লড়াই সম্ভব। মাশরাফি এর আগেও ব্যাটসম্যানদের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন রান করার ব্যাপারে। কিন্তু তারা তাতে সাড়া দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘এটি আসলেই আমাদের জন্য খুবই কঠিন একটি দিন। আমরা শুরুতেই উইকেট খুইয়েছি। পার্টনারশিপগুলোও খুবই দুর্বল। দেখবেন ৩০-এর মধ্যে সব পার্টনারশিপ যেটুকু রান হয়েছে তাতে। অথচ এগুলো ৬০-এর মধ্যে থাকলে স্কোরটা বেড়ে যেত।’

ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মোহাম্মাদ মিথুন ধারাবাহিকতায় রয়েছেন। দু’টি ইনিংসেই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। এ ম্যাচে তার পায়ে মাংসপেশিতে কিছুটা সমস্যার জন্য ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে। নতুবা একটা বড় ইনিংস অনায়াসেই খেলতে পারতেন। সে আত্মবিশ্বাস দেখা গেছে তার ব্যাটে। তেমনি সাব্বির রহমান। তিনিও বেশ আস্থার সাথে খেলেছেন। কিন্তু ক্রিজে থেকে ধৈর্য ধরে খেলার যে একটা মনমানসিকতা, সেটি তিনি দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন। মাশরাফি ম্যাচ শেষে আরো বলেছেন, ‘আমাদের টপ অর্ডারের মধ্যে কিছুটা সেট হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে! কিন্তু সত্যিই তো সেটি মোটেও প্রয়োজনীয়তার সাথে মেলানো যাবে না। আসলে এটিও ঠিক, একটা ম্যাচে সফলতা পেতে সবাইকেই কন্ট্রিবিউট করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশ সে কাজটাই করতে ব্যর্থ হচ্ছে। গত দুই ম্যাচে একই পারফরমেন্স।

বাংলাদেশ প্রতিটা বিশ্বকাপের আগেই সেটির জন্য স্পেশাল গুরুত্ব দিয়ে আসছে। কিন্তু এবার নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকে যেটুকু প্রত্যাশা ছিল সেটা বোধহয় আর পাওয়া সম্ভবপর হবে না। স্বাভাবিকভাবেই হেড কোচ স্টিভ রোডর্সের জন্য অ্যালার্মিং। যদিও এখনো অনেক সময় রয়েছে। কিন্তু ইংল্যান্ডের কন্ডিশনটা তো অনেকাংশে নিউজিল্যান্ডের সাথে মিলে যায়। এমন কন্ডিশনে এভাবে ব্যর্থতার ঝাপি খুলে যারা বসেছে। তাদের আপডেট করা সম্ভব কিভাবে। যারা রান পাচ্ছে না তাদের নতুন করে কী-ই বলার আছে। এখন শুধু অপেক্ষা। সিনিয়র ওই সব ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে আস্থা ফিরবে কখন। সিরিজ তো এখানেই শেষ। এখন হোয়াইটওয়াশের অপেক্ষা। তার চেয়েও বড় নিজেদের পারফরমেন্সের ওপর আত্মবিশ্বাস ফেরানো। সেটি কী শেষ ম্যাচে পারবে, নাকি নতুন কোনো চাপ তৈরি হয়ে আছে তাদের ওপর সেটি কে জানে!

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top