বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে সাম্প্রতিক ঘটনার পর, দুর্ভাগ্যবশত রোহিঙ্গাদের জন্মস্থান রাখাইন রাজ্যে তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ বা টেকসই প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয় না।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ফ্রেডরিখ-এবার্ট-স্টিফটাং (এফইএস) বাংলাদেশের সহযোগিতায় সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে, খুব শিগগিরই তারা হবে বলে মনে হচ্ছে না।’
অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, সাবেক কূটনীতিক ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জাতীয় নদী সুরক্ষা কমিশন এবং সিজিএস -এর চেয়ারম্যান মঞ্জুর এ চৌধুরী ও এফইএস বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফেলিক্স কোবিজ।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জরুরি প্রতিক্রিয়া থেকে আরও টেকসই অবস্থায় উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকার এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক দাতা সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে চাই। যাতে শরণার্থীদের শিক্ষা ও জীবিকা অর্জনের আরো ভালো সুযোগ এবং ক্যাম্পগুলোতে আরো বেশি নিরাপত্তা প্রদান করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে এবং মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন সম্ভব না হওয়া পর্যন্ত তাদের আতিথেয়তা অব্যাহত রাখবে।
রাষ্ট্রদূত হাস উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পাঁচ বছর পূর্তি এবং মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে তাদের অভিবাসনের সুযোগ দিয়ে তারা সম্প্রতি একটি গভীর মাইলফলক অর্জন করেছে।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ তাদের দেশে স্বাগত জানিয়ে আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্য উদারতা ও সহানুভূতি দেখিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর যে আর্থিক বোঝা চাপিয়েছে আমরা সে বিষয়ে সচেতন’।
এই অবিশ্বাস্য আতিথেয়তার সমর্থনে রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছে যে তারা রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশি আপ্যায়নকারী সম্প্রদায়কে সহায়তার জন্য অতিরিক্ত ১৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে।
এই নতুন অর্থায়নে, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট সহায়তা প্রায় এক দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমরা এই প্রয়াসে সহযোগিতা করেছি এই আশায় যে রোহিঙ্গারা শিগগিরই নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের জন্মভূমিতে ফিরে যেতে পারবে।’
কক্সবাজার ও ভাসানচর দ্বীপে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
সূত্র : ইউএনবি