ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার আছিম শাহাবুদ্দিন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষেরর বিরুদ্ধে কলেজ পরিচালনা কমিটি গঠনের নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এক বছর ধরে কলেজের আয় ব্যয়ের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে অনুমোদন বিহীন ভাবে কোটি টাকা নয় ছয় করেছেন। কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলেই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারিশ পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার দক্ষিনাঞ্চলের অন্যতম বিদ্যাপীঠ আছিম শাহাবুদ্দিন মহা বিদ্যালয়। দুই সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে কলেজটিতে। শিক্ষক কর্মচারী রয়েছে ৩৪ জন।
গত নভেম্বরে নিয়মিত কলেজ পরিচালনা কমিটি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষনা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। ঐ নির্বাচনের আবু সাইদ চৌধুরী, আবুল বাশার, নজরুল ইসলাম অভিভাবকদের ভোটে নির্বাচিত হন। ২০২২ সালের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা ক্লাশের সময় তাদেরকে পরিচয় করে দেন কলেজের অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন। কিন্তু উক্ত কমিটি নিয়ে অধ্যক্ষ্য তালবাহানা শুরু করেন। তাদেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে গত ফেবরুয়াী মাসে এডহক কমিটি গঠন করেন। এ নিয়ে নির্বাচিত কমিটির সদস্য ও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হলে অনিয়মিত ভাবে কলেজে আসার শুরু করেন অধ্যক্ষ। এক বছরের কলেজর ফরম ফিলাপ, ভর্তি ফিসহ অন্যান্য খাতের প্রায় কোটি টাকার উপরে ব্যাংকো জমা না দিয়ে অধ্যক্ষের হাতেই রেখে দেন। বিনা অনুমোদনে সেই টাকা থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ৬ মাসের বেতন ও দুটি বোনাস বাবদ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা বিতরণ করেন। এক বছরের কলেজের অন্যান্য খাতের বড় অংকের একটি টাকা শুধু ভাইচার মূলে তছরূপ করেন। শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতনের ৪০ লক্ষ টাকা ও ভাউচার মূলে খরচ করা বড় একটা অংকের টাকার জন্য এডহক কমিটির আহবায়ক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অনুমোদন নেয়া হয়নি। এক বছরে এডহক কমিটির কোন মিটিং করেননি কলেজের অধ্যক্ষ।
নির্বাচিত অভিভাবক প্রতিনিধি আবু সাইদ চৌধুরী জানান, আমরা ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ। এক বছর ধরে কমিটি অনুমোদনের জন্য দিনের দিনের আমাদের হয়রানি করে গোপনে গত ফেবরুয়ারী মাসে এডহক কমিটি গঠন করে। নিয়মিত কমিটি কলেজের দায়িত্ব বুঝে নিলে তার অনিয়ম দূর্নীতি প্রকাশ পেয়ে যাবে এই ভয়েই তড়িগড়ি করে এডহক কমিটি গঠন করে। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। সুষ্ঠ তদন্ত হলে সকল দূর্নীতি প্রকাশ পাবে।
কলেজের অধ্যক্ষ মকবুল হোসেন জানান, কলেজ পরিচালনা কমিটির নির্বাচন সঠিক ভাবে না হওয়ায় জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় অনুমোদন দেয়নি। অনুমোদন না হওয়ার বিষয়টি তিনি কেন গোপন করলেন এ নিয়ে তিনি কোন কথা বলেননি। কলেজের এক বছরের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে তিনি কিভাবে খরচ করলেন জানতে চাইলে বলেন, আমার ভূল হয়ে গেছে।
এ নিয়ে উপজেলা র্নিবাহী নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদুল করিম বলেন, আমি যত দিন ধরে ঐ কলেজের এডহক কমিটির দায়িত্বে আছি সরকারী অংশের বিল ছাড়া আমি কোন কাগজে স্বাক্ষর করিনি। কলেজের অধ্যক্ষ আমার সাখে পরামর্শ না করেই ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে কোটি টাকা কেমনে খরচ করলেন তা আমার বোধগম্য নয়। কলেজ পরিচালনা কমিটির নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা ও ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে কেমনে টাকা খরচ করলেন জানতে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হবে।