বিএনপির সাম্প্রতিক সমাবেশগুলোতে হামলা প্রতিরোধ করতে দলের নেতাকর্মীরা পতাকা হাতে অংশ নিচ্ছে। প্রতিরোধের প্রয়োজনে পতাকার সেই লাঠি আরও লম্বা করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য ব্রিগেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একদলীয় শাসন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে খালি গায়ে গুলি করছে। তারপরও শেখ হাসিনার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তিনি নির্দ্বিধায় উচ্চবাচ্য করছেন, অসত্য কথা বলে যাচ্ছেন। এতো ব্যারিকেড, এতো হত্যাকাণ্ডের পরও সাধারণ মানুষ যেভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছে, কারণ আজকে মানুষ জেগে উঠেছে ন্যায়ের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে তারা দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, পতাকার যে লাঠি সে লাঠি আরও লম্বা করতে হবে। লম্বা লাঠি নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
রিজভী বলেন, আপনারা দেখেছেন গণমানুষ কীভাবে বিএনপির কর্মসূচিতে আসছেন? যারা পুলিশের গুলিতে মারা যাচ্ছেন, তাদের কেউ ইজিবাইকের ড্রাইভার, কেউ মেকানিক, কেউ উবার চালক। ওরা সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে জীবন দিচ্ছে। বিএনপি আজকে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি, অনুমতির অপেক্ষা এর মধ্যে নেই। বিএনপিতে আজকে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। সাধারণ মানুষ, ভ্যান চালক, ইজিবাইক চালক, মেকানিক, উবার চালক সকলে বিএনপির পতাকাতলে আসছে, সমবেত হচ্ছে। গুলির পর রক্তে রঞ্জিত হয়ে শার্ট যে লাল হচ্ছে সেটি তখন আর শার্ট থাকে না। কবি শামসুর রাহমানের ভাষায় সেটি হয়ে যায় প্রাণের পতাকা।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আজকে ইডেন কলেজের ঘটনা যখন পড়ি, তখন মনে হয় কোন দেশে আছি? কোন জায়গায় আছি? প্রধানমন্ত্রী আপনার কী টনক নড়ে না? গোটা জাতিকে কোন জায়গায় নিয়ে গেছে আপনার ছাত্র সংগঠন? আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, জাতিসংঘের অধিবেশনে বড় বড় কথা বলছেন, আর নিজের ঘরে যে কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত করছেন সেটার দিকে কি তাকিয়ে দেখেছেন? তাকিয়ে দেখবে না, কারণ আপনার জবাবদিহি করার প্রয়োজন নেই। আপনার অবৈধ পার্লামেন্টে পছন্দের লোকদের এমপি-মন্ত্রী করেছেন সেখানে আপনার জবাবদিহির প্রয়োজন নেই।
মরহুম ব্রিগেডিয়ার হান্নান শাহের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের কথা বলতে গিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, নেতৃত্বের প্রতি কীভাবে অবিচল থাকা যায় সেটা উনার জীবনী থেকে শেখা যায়। জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে এতো এত ক্যু হয়েছে, উনি জিয়াউর রহমানের প্রতি, জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতি, দেশের প্রতি অবিচল আস্থা দেখিয়েছেন। ১/১১ এর পর দুর্দিনে তিনি অবিচল থেকে দলকে সংগঠিত করেছেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও হান্নান শাহ স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের পরিচালনায় স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বক্তৃতা করেন। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, শহীদুল ইসলাম বাবুল, হান্নান শাহের ছেলে গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান প্রমুখ।