নরসিংদীর একটি হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামনাথপুর দক্ষিণপাড়ার সুজন ওরফে বাঘা সুজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার সাথে উক্ত মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আরও দুই আসামিও খালাস পেয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বাড়িতে ডেকে নিয়ে নরসিংদীতে বরফকলের শ্রমিক আইয়ুব মিয়াকে (২৮) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে শুনানি শেষে ৩ জনকে খালাস ও ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির মধ্যে বৌয়াকুড় মহল্লার সাদ্দাম হোসেন ও চাঁদপুরের মতলব উপজেলার আম্মাকান্দা গ্রামের এরশাদ মিয়া ও বিমল খালাস পেয়েছেন। আর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার রামনাথপুর দক্ষিণপাড়ার সুজন ওরফে বাঘা সুজন, নরসিংদী পৌর শহরের পশ্চিম কান্দাপাড়া মহল্লার সোহাগ চন্দ্র দাস ও সমীর চন্দ্র দাসকে।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বর নরসিংদীতে বরফকলের শ্রমিক আইয়ুব মিয়া হত্যা মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছিলেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে অপর এক ধারায় দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের প্রত্যেককে তিন বছর করে কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেন নরসিংদীর অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন।
রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ নথিপত্র ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আসে, যা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। ডেথ রেফারেন্সের ওপর আজ শুনানি শেষে রায় দেন আদালত।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, নরসিংদী শহরের বৌয়াকুড়স্থ মোসলেহ উদ্দিন সুপার মার্কেটের একটি বরফকলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন ময়মনসিংহের সুজন। কাজে ফাঁকি দেওয়ায় তার চাকরি চলে গেলে সুজনের স্থলে নতুন শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ পান শহরের বৌয়াকুড় মহল্লার আইয়ুব।
এ নিয়ে আইয়ুবের ওপর ক্ষিপ্ত হন চাকরিচ্যুত সুজন। এরই জেরে ২০০৮ সালের ২৯ আগস্ট সুজন মোবাইল ফোন করে মালিকের বাসায় দাওয়াতের কথা বলে আইয়ুবকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন।