চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিশেষায়িত বিষয় সমুদ্রবিজ্ঞানে পড়ে আবেদন করতে পারছেন না সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) সামুদ্রিক মৎস্য শাখার পরিদর্শক পদে। এ নিয়ে ঢাবি সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইতিমধ্যে তারা সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের চেয়্যারমান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ক্রমিক নাম্বার ৪৮- ইউনিট ৮ এ সমুদ্র মৎস্য শাখার পরিদর্শকে (১০ গ্রেড) ১২ টি স্থায়ী পদের উল্লেখ রয়েছে। এতে শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসাবে কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক ডিগ্রি অথবা প্রাণিবিদ্যা বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি বা দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অথবা মৎস্য বিষয়ে ০৪ (চার) বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা চাওয়া হয়েছে ও বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর আবেদন করতে পারবেন।
লিখিত অভিযোগে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের গ্র্যাজুয়েটরা বলেন, ‘বর্তমানে সরকারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে টেকনিক্যাল বিষয়ে আবেদন করার সুযোগ সীমিত। বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারমূলক বিষয়ের মধ্যে সুমুদ্র অর্থনীতি অন্যতম। কিন্তু সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ কারিগরি পদে কোথাও সংযুক্তি হচ্ছেনা। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের প্রকাশিত নন-ক্যাডার নিয়োগ বিজপ্তিতে ‘সামুদ্রিক মৎস্য শাখার পরিদর্শক পদে’ মৎস্যবিজ্ঞান এবং প্রাণিবিজ্ঞান ব্যতীত আর কোনো বিষয় চাওয়া হয়নি। আমরা মনে করি, সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয়ও এখানে অন্তর্ভুক্ত হওয়া প্রয়োজন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ইফতেখার বিন আলী বলেন, ‘পদটির কাজ পুরোটাই সমুদ্রভিত্তিক। এখানে দরকার অবশ্যই সমুদ্র বিজ্ঞানের গ্র্যাজুয়েট। কিন্তু এ পদে প্রাণিবিজ্ঞান ও মৎস্যবিজ্ঞান ডিপ্লোমা আবেদন করতে পারবে কিন্তু সমুদ্রবিজ্ঞানের গ্রাজুয়েটরা আবেদন করতে পারবে না, এটা আমাদের সাথে চরম অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা যদি আমাদের সেক্টরে অবদান রাখতে না পারি তাহলে সমুদ্রবিজ্ঞানী হয়ে আমাদের লাভটা কি হলো? আমরা চাইবো নিয়োগটি সংশোধন করে আমাদের আবেদন করার সুযোগ দেওয়া। ‘
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের চেয়্যারমান ড. কে এম আজম চৌধুরী বলেন, এ নিয়োগে সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের গ্র্যাজুয়েটদের অন্তভূক্তি করা ও আবেদনের সুযোগ দেওয়া উচিত। শিক্ষার্থীরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, আমি এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবো যেন সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা এতে আবেদন করতে পারে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের চেয়্যারমান মো. সোহরাব হোসেন বলেন, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আমরা কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে তদন্ত করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।