চট্টগ্রাম নগরীর চাক্তাই এলাকার ভেড়া মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুই পরিবারের রয়েছে ৭ জন এবং অন্য দুজনের পরিচয় এখনো মেলেনি। আগুনের পুড়ে গেছে অন্তত ২শ’ বসতঘর। এ ঘটনায় কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে দুই পরিবারের ৭ জনসহ ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত হয়েছে আরো বেশ কয়েকজন।
নিহতদের মধ্যে এক পরিবারের রয়েছে ৩ জন। তারা হলেন- হাসিনা আক্তার (৩৫), আয়শা বেগমা (৩৭), সোহাগ (১৯)। অপর এক পরিবারের চার সদস্য মারা যায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। তাদের মধ্যে রয়েছে রহিমা আক্তার (৩৬), তার মেয়ে নাজমা আক্তার (২৭), জাকির হোসেন বাবু (৮), নাসরিন (১৬)। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি ও ৭/৮ মাসের আরেকটি শিশুর লাশ উদ্ধার করা হলেও তাৎক্ষণিক তাদের নাম জানা যায়নি।
মোট নয়জনের লাশ উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো: জসীম উদ্দীন বলেন, ঘুমন্ত অবস্থায় মৃত্যু হয় নারী-শিশুসহ নয়জনেরই।
তিনি বলেন, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ারের সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
তিনি আরো জানান, ফায়ার সার্ভিসের চন্দনপুরা, লামারবাজার, নন্দনকানন ও আগ্রাবাদ স্টেশনের ১০টি গাড়ি প্রায় দেড় থেকে দু’ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও আগুন লাগার কারণ জানাতে না পারলেও এ ঘটনায় ভেড়া মার্কেটের দুশ’ ঘর পুড়েছে বলে জানান। তাছাড়া সকাল সাড়ে ১১টার সময়ও ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের ওই কর্মকর্তা।
এদিকে দুর্ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শনে যায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এসময় জেলা প্রশাসক মো: ইলিয়াস হোসেন গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছেন, এ ভেড়া মার্কেটে এক হাজারেরও বেশি লোক বসবাস করেন। এখানে দখল-বেদখলের একটি বিষয় নিয়ে কয়েকটি গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে বিবাদে লিপ্ত রয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
সে বিষয়টিসহ মাথায় রেখে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাশহুদুল কবীরকে আহ্বায়ক ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা আলী আকবরকে সদস্য সচিব করা হয়।
এছাড়া জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের দাফনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন।