নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগড় ইউনিয়নে ৬ষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থী আপন চন্দ্র দাস (১৩) খুনের ঘটনায় মা ও পরকীয়া প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুনের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে গত বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ওই এলাকা থেকে নাগেরগাতি গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে মো.মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে ফিজু (৪০) ও শিক্ষার্থীর মা সরলা রাণী দাস (৪৮) কে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, আপন চন্দ্ৰ দাস গত ২৬ আগস্ট বিকেলে বাড়ি থেকে বের হলে আর ফিরে আসেনি। নিখোঁজের ৫দিন পর মঙ্গলবার বিকেলে ওই ইউনিয়নের পাবিয়াখালী গ্রামের ধান ক্ষেত থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজের দিন বিকেলে মাছ ধরার কথা বলে আপন কে খবর দেয় ঘাতক মোস্তফিজুর। পরে ওই দিন রাতে তার স্ত্রী-সন্তানরা বাড়িতে না থাকায় ঘরের দরজা বন্ধ করে আপনকে খুন করে ধান ক্ষেতে ফেলে দেয়। পরে ওই রাতেই ঘুমের ঔষধ খেয়ে মায়ের ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে কাজের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান ঘাতক। তবে ঘটনার দিন আপন দাস এর মা সরলা রাণী দাসের ভুমিকাও ছিল রহস্যজনক। ৪ বছর আগে তার স্বামী মারা যাওয়ার পর প্রতিবেশী মোস্তাফিজুরের সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হন সরলা দাস। একদিন রাতে তাঁদের মেলামেশার দৃশ্য কিশোর ছেলে আপন দেখে ফেলে আর এ দেখাই কাল হয়ে উঠে তার জীবনের। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আপনের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে আপন হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবীতে গত ১ সেপ্টেম্বর এক মানববন্ধন হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনাটি সত্যি দুঃখজনক। ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তে মাঠে কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আরো তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য: ওই খুনের ঘটনায় গত (৩০ আগস্ট) রাতে নিহতের বড় বোন ঝর্না রানী দাস বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুর্গাপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। আদালতের জবানবন্দিতে মোস্তাফিজুর খুনের সাথে প্রত্যক্ষ জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শুভাশিষ গাঙ্গুলি।