সোমেশ্বরী নদীর বালুচর থেকে উদ্ধারকৃত সেই নবজাতকের পরিবারের সন্ধান পাওয়া গেছে। শিশুটির মা সন্তান প্রসবের জন্য গত ৩১ আগস্ট ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি হলে মৃত নবজাতকের জন্ম হয়। পরে এই শিশুটির মরদেহ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সোমেশ্বরী নদীর বালুচরে গর্তকরে বালুচাপা দিয়ে দেয় শিশুটির নানা। এদিকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা মৃত শিশুটির মা মুর্শিদা খাতুনও পরদিন মারা যান। এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে।
দুর্গাপুর থানা পুলিশের অনুসন্ধানে পরিবারের খোঁজ পাওয়ার পর ময়নাতদন্ত ছাড়াই শনিবার রাতেই মৃতদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এর আগে শনিবার বিকেলে তেরিবাজার ফেরিঘাটের বালুচরে শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে কয়েকজন পথচারী পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে থানা নিয়ে যায়।
জানা গেছে, ওই নবজাতক উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিজয়পুর এলাকার এনামুল ও মৃত মুর্শিদা দম্পতির সন্তান। (৩১ আগস্ট) বুধবার সকালে গর্ভবতী স্ত্রীকে দুর্গাপুর থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলেন এনামুল। সন্ধ্যায় হাসপাতালে তার স্ত্রী মৃত কন্যা শিশু প্রসব করেন। পরে ওই শিশুর নানা আব্দুল মতিন মৃত শিশুটিকে নিয়ে দুর্গাপুরে বাড়িতে ফিরতে চান। এদিকে মৃত শিশুটিকে বাড়িতে নিবেন না ভেবে দুর্গাপুরে ফিরে গভীর রাতেই সোমেশ্বরী নদীর বালুচরে গর্তকরে বালুচাপা দিয়ে দেয়। অপরদিকে শিশুর মৃত্যুর পরদিনই (০১ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবারে মারা যায় মুর্শিদা খাতুন।
মৃত ওই শিশুর নানা আব্দুল মতিন বলেন,আমার মেয়ে মৃত শিশু জন্ম দিলে। মৃত শিশুটির দাফনের জন্য শিশুটিকে নিয়ে আমি দুর্গাপুর বাড়ি ফিরতে চাই। ময়মনসিংহ হতে দুর্গাপুর আসতে গভীর রাত হয়ে গেলে শিশুটিকে বাড়ি না নিয়ে বালুচরে গর্ত করে কবর দিয়ে চলে যায়। এরপরদিনই আমার মেয়েটাও মারা যায়। আমি বুঝতে পারিনি না বোঝেই শিশুটির প্রতি এ অবিচার করেছি।
দুর্গাপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল ফাহাদ জানান, আমাদের অনুসন্ধানে পরিবারের খোঁজ মেলে। পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।