ছয় মাসে পাঁচ শতাধিক বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তার নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির আদেশ দেয়া হয়েছে। এসব কর্মকর্তার মধ্যে প্রেষণে বিচার বিভাগের পাশাপাশি নির্বাহী বিভাগেও কর্মরত রয়েছেন। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অবশ্য এসব প্রজ্ঞাপন জারির আগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট তথ্য মতে, নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতি পাওয়া বিচারকেরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল, সাইবার ট্রাইব্যুনাল, সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনাল, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল, বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, কাস্টমস হাউজ, শ্রম আদালত, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের পরিচালক, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আবার এর মধ্যে বেশ কিছু কর্মকর্তাকে সহকারী জজ হিসাবে নিয়োগ, জুডিশিয়াল ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিনিয়র সহকারী জজ, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন। এদের মধ্যে কিছু কর্মকর্তাকে প্রেষণে বদলি করা হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিচার বিভাগের পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় তথা নির্বাহী বিভাগে এ পর্যন্ত প্রায় তিন শ’ বিচারিক কর্মকর্তা প্রেষণে নিয়োজিত রয়েছেন। তারা দীর্ঘ দিন ধরে বিচারকাজের বাইরে নির্বাহী বিভাগে কর্মরত আছেন। এর মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সংসদ সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত আছেন। এছাড়া প্রেষণে বদলি বা পদায়ন অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে কিছু কর্মকর্তাকে স্বল্প সময়ের জন্য বিচারকাজে আদালতে দেয়া হলেও পরে তাদের পুনরায় নির্বাহী বিভাগে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
এদিকে ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে জেলা জজের শূন্য পদ পূরণের জন্য পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করে আইন মন্ত্রণালয়। তবে তৎকালীন (পদত্যাগ করা) প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সাথে আইন মন্ত্রণালয়ের টানাপড়েনের কারণে ওই প্রস্তাব আর অগ্রগতি হয়নি। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের পর আবার জেলা জজ ও পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করে আইন মন্ত্রণালয়। এরপর নতুন অর্থাৎ বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ফুল কোর্ট সভা জেলা জজ পদোন্নতির শর্ত শিথিল করেন। এরই ধারাবাহিকতায় এসব বিচারিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করে আইন মন্ত্রণালয়।