শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে প্রেমের টানে নিখোঁজ হওয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক কিশোরীকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। গতকাল শনিবার (৩০) জুলাই গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকা থেকে প্রেমিক মাহদি মৃধাসহ তাকে উদ্ধার করা হয়। সে উপজেলার ভটপুর গ্রামের কোটেশ^র বর্মণের কন্যা ও বনকুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে গত রবিবার (২৪ জুলাই) বিদ্যালয়ে যাওয়ার কথা বলে নিখোঁজ হয়।
পুলিশ জানায়, গাজীপুর জেলার হোতাপাড়া এলাকার সিরামিক কারখানার শ্রমিক দশম শ্রেণীর ছাত্র মাহদী মৃধার সাথে ৮ মাস আগে ফেসবুকে পরিচয় হয় ওই কিশোরীর। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমকে বিয়ের পরিনয় ঘটাতে ২৪ জুলাই মাহদী তার ফোন থেকে কিশোরীর মায়ের মোবাইলে জানায় তাকে বিদ্যালয় থেকে বৃত্তির টাকা দেয়া হবে। এজন্য তাকে বিদ্যালয়ে আসতে হবে। বিদ্যালয়ে যাওয়ার পর ওই কিশোরী আর বাড়ী ফেরেনি। অনেক খুজাঁখুজি করে তার পরিবার নালিতাবাড়ী থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন।
এদিকে, ওই কিশোরী প্রেমের টানে গাজীপুরের প্রেমিক মাহদী মৃধার কাছে চলে যায়। হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় মাহদীর পরিবার তাকে মেনে নিতে চায়নি। তাই গত সোমবার (২৫ জুলাই) গাজীপুর আদালতে এফিডেফিট করে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয় ওই কিশোরী।
তার বর্তমান নাম তাবাচ্ছুম মৃধা। এরপর থেকে দুজনে সংসার জীবন শুরু করে। বাবা যাতে তাবাচ্ছুমকে খুজে না না পায় এজন্য গত মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) অনুরাধা সেন নামে (তাবাচ্ছুমের) ফেসবুক আইডি থেকে মুখ বাঁধা মৃত লাশের মতো একটি ছবি পোষ্ট করা হয়। সেখানে বলা হয় না খুজাই ভালো। খুজে লাভ হবে না। সি ইজ ডেড। এই ছবি দেখে তাবাচ্ছুমের পরিবার ওই আইডিতে কল দিলে বলা হয় তাবাচ্ছুম আর বেঁচে নেই। মুর্হুতেই ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়ে তাবাচ্ছুমের পরিবার। পরে পুলিশকে জানালে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গাজীপুরের হোতাপাড়া থেকে গতকাল শনিবার (৩০ জুলাই) প্রেমিক যুগলকে নালিতাবাড়ী থানায় আনা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তাবাচ্ছুম জানায়, সে নিজের ইচ্ছায় মাহদীর কাছে গাজীপুর চলে যায়। সে আরো জানায় মারা গেছে বলে ফেসবুকে প্রচার দিলে পরিবারের লোকজন তাকে আর খুঁজাখুজি করবে না। হাল ছেড়ে দেবে। এজন্য সে ওড়না দিয়ে নিজের মুখ বাঁধা মৃত লাশের মতো ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করে।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল জানান, এটি প্রেম ঘটিত ব্যাপার। নিখোঁজ কিশোরীকে গাজীপুর থেকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী থানায় আনা হয়েছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।