নেত্রকোনার দুর্গাপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কমরেড মণি সিংহ মেলা উদ্যাপন কমিটি আয়োজিত বৃটিশ বিরোধী সংগ্রামী, টঙ্ক আন্দোলনের মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের উপদেষ্টা, মেহনতী মানুষের মুক্তি সংগ্রাম এবং সমাজতন্ত্রের মহান নেতা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড মণি সিংহ এর ১২১ তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি নানা আয়োজনে এ দিবস পালিত হয়।
এ উপলক্ষে কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি জাদুঘর মিলনায়তনে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সুশীল সমাজের ব্যাত্তিদের অংশগ্রহনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন শেষে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন মেলা কমিটির আহŸায়ক প্রবীন রাজনীতিবীদ বর্ষীয়াননেতা দূর্গা প্রসাদ তেওয়ারী। পরবর্তিতে মনিসিংহের প্রতিকৃতিতে পূষ্পার্ঘ্য অর্পন শেষে এক আনন্দ শোভাযাত্রা পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন শেষে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা ও বৃক্ষরোপন করা হয়। বিকেলে সিপিবি উপজেলা সম্পাদক রুপন কুমার সরকার এর সঞ্চালনায় কমরেড মণি সিংহ মেলা উদ্যাপন কমিটির সদস্য আহŸায়ক বাবু দূর্গা প্রসাদ তেওয়ারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কমরেড মণি সিংহের পুত্র সিপিবি‘র কেন্দ্রিয় কমিটির নেতা ডাঃ দিবালোক সিংহ। অন্যন্যের মধ্যে আলোচনা করেন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সোহরাব হোসেন তালুকদার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ হক, উপজেলা সুজন সভাপতি অজয় কুমার সাহা, উপজেলা সিপিবির সভাপতি আলকাছ উদ্দিন মীর, প্রেসক্লাব এর সহ:সভাপতি তোবারক হোসেন খোকন, উপজেলা কৃষক সমিতির সাধারন সম্পাদক মোরশেদ আলম, প্রধান শিক্ষক একেএম ইয়াহিয়া প্রমূখ। আলোচনা সভা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের শোষণ মুক্তির লড়াই-সংগ্রামের পুরোধা কমরেড মণি সিংহ। সারাজীবন লড়াই করে গেছেন এদেশের খেটে খাওয়া-মেহনতী মানুষের জন্য। দেশের স্বাধীনতা অর্জন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তার অবদান অবিস্মরণীয়। কমরেড মণি সিংহ ১৯০১ সালের ২৮ জুলাই কলকাতার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র আড়াই বছর বয়সে বাবা কালি কুমার সিংহের মৃত্যু হলে ঢাকায় তার মামা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুরেন সিংহের বাড়িতে চলে আসেন। মণি সিংহের মা সরলা দেবী ছিলেন তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার সুসঙ্গ দুর্গাপুরের জমিদারদের বড় বোন। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হবার পরে পূর্ণ গণতন্ত্র ও শোষণ মুক্ত সমাজের আদর্শকে যারা সামনে এনেছেন মণি সিংহ তাদেরই একজন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত পাটির দ্বিতীয় কংগ্রেসে মণি সিংহ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি গুরুতর অসুস্থ পড়েন। ৮৪ বছর বয়স পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে পার্টির দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।