খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার দুই দশক ধরে বাংলাদেশে কমেছে। আজ বুধবার প্রকাশিত জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশের ১ দশমিক ২৩ শতাংশ মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে। বিভাগের হিসাবে, দেশের আট বিভাগের মধ্যে রংপুর বিভাগে খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার সবচেয়ে বেশি। অপরদিকে ময়মনসিংহে ১ দশমিক ৫৫ মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে প্রাথমিক এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, আট বিভাগের মধ্যে খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার সবচেয়ে কম ঢাকা বিভাগে, শূন্য দশমিক ২৮ শতাংশ। এর হার সবচেয়ে বেশি রংপুরে, ৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। রংপুরের পরেই আছে সিলেট বিভাগ। এখানে খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার ২ দশমিক ৬৫।
দেশের অন্য বিভাগগুলোর মধ্যে বরিশালে খোলা জায়গায় মলত্যাগের হার শূন্য দশমিক ৩০, খুলনায় শূন্য দশমিক ৩৪, চট্টগ্রামে শূন্য দশমিক ৯০, ময়মনসিংহে ১ দশমিক ৫৫ ও রাজশাহীতে ১ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
জনশুমারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪, নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬। পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা বেশি। গত এক দশকে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৯ জন।
জনশুমারি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে ৮৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ পরিবারের (খানা) প্রধান উৎস গভীর ও অগভীর টিউবওয়েল এবং ১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ পরিবারের খাবার পানির প্রধান উৎস ট্যাপ বা সরবরাহের পানি। রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ ৯৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ পরিবারের খাবার পানির প্রধান উৎস গভীর ও অগভীর টিউবওয়েল। আর ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ পরিবারের খাবার পানির উৎস ট্যাপ বা সরবরাহের পানি।
পানি ও স্যানিটেশেন দুই দশক ধরে বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের তৈরি ‘জয়েন্ট মনিটরিং প্রোগ্রাম-জেএমপি প্রতিবেদন ২০২১’–তে দেখা গেছে, বাংলাদেশ পানি ও স্যানিটেশন খাতের উন্নতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। গত পাঁচ বছরে এ দুই খাতে বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের মতো দেশগুলো। অথচ এ দুই ক্ষেত্রে আগে বাংলাদেশের অগ্রগতি ছিল চোখে পড়ার মতো। এসব খাতে এখন শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে।