হোসনি দালানে গ্রেনেড হামলায় ২ জঙ্গির কারাদণ্ড, ৬জন খালাস

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে পুরান ঢাকার হোসনি দালানে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে দুই আসামির বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড­ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অপর ৬ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আসামি আরমান ওরফে মনির ও কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আসিফকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে আরমানকে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড­, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর কবির হোসেনকে ৭ বছর সশ্রম কারাদণ্ড­, ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড­ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অপর ৬ আসামি আবু সাঈদ ওরফে সালমান, রুবেল ইসলাম ওরফে সুমন ওরফে সজীব, চান মিয়া, ওমর ফারুক, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ ও শাহজালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। এজন্য তাদেরকে মামলার দায় থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায় উপলক্ষে কারাগারে থাকা আসামি আরমান ও কবির হোসেনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। অপর আসামিরা জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার আগে তারা ট্রাইব্যুনালে হাজির হন।

২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর রাত পৌনে ২টার দিকে তাজিয়া মিছিলে জামা’আতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন।

হামলার পর আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানায় মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ডিবি দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন শেখ ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ১০ জঙ্গিকে আসামি করে চার্জশিট অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠান। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর তা ওই বছরের অক্টোবরে বিচারিক আদালতে আসে।

১০ আসামির মধ্যে দুজন শিশু হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে দোষীপত্র দেওয়া হয়। তাদের বিচার শিশু আদালতে চলছে। আর বাকি আট আসামির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩১ মে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ চার্জ (অভিযোগ) গঠনের আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলাটি ঢাকার অষ্টম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলি করেন।

এরপর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে ওই আদালত থেকে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য বদলি হয়ে আসে। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ৪৬ জনের মধ্যে ৩১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত ১ মার্চ রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আজ (১৫ মার্চ) রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

তাজিয়া মিছিলে ওই হামলায় ১৩ জঙ্গি জড়িত ছিল। এদের মধ্যে ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযানের সময় তিন জঙ্গি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যায়।

Share this post

scroll to top