স্ত্রী হত্যার দেড় বছর পর ঈশ্বরগঞ্জে গ্রেফতার হলেন স্বামী

স্ত্রী হত্যার দেড় বছর পর ঈশ্বরগঞ্জে গ্রেফতার হলেন স্বামীগাজীপুরে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ বিথী হত্যা মামলার প্রধান আসামি নিহতের স্বামী মো. রাশেদ চৌধুরী ওরফে রন্টিকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। স্ত্রী বিথীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন রন্টি। তিনি মহানগরীর বাসন থানার ভোগড়া এলাকার আফিজ উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে।

সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজীপুর পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর হাফিজুর রহমান জানান, স্ত্রী বিথী হত্যার পর থেকে রন্টি পলাতক ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে রন্টিকে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন তাকে গাজীপুর আদালতে হাজির করা হলে তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট মো. রাশেদ চৌধুরী ওরফে রন্টি, তার বোন তোরা, মামা খালেক, মামাতো ভাই ছানি, কাজের মেয়ে আছমা, আছমার স্বামী মুমিন ও রন্টিদের বাসার ভাড়াটিয়া লিটন মিলে গৃহবধূ ফারজানা আক্তার ওরফে বিথীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এ হত্যাকাণ্ডের দিন ৯ আগস্ট সকাল পৌনে ৮টার দিকে রন্টি ফোন করে লিটনকে বাসায় ডেকে নেয়। রন্টির দোতলার বাসায় এসে লিটন দেখে রন্টি তার বোন তোরা, সানি, কাজের মেয়ে আছমা ও তার স্বামী মুমিন বসে আছে। এক পর্যায়ে তোরা তার গায়ের ওড়না দিয়ে বিথীর গলা প্যাঁচিয়ে ধরে। রন্টি ও তোরা দুই দিক থেকে ওড়না টেনে ধরে। রন্টি এক হাত দিয়ে ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে। এ সময় সানি বিথীর দুই হাত ও লিটন পা চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে। কাজের মেয়ে আছমা ৪-৫ মিনিট পর রন্টির মামা খালেককে ডেকে নিয়ে আসে। এ সময় বিথীর মেয়ে কান্নাকাটি শুরু করায় লিটন শিশুটিকে নিয়ে তৃতীয় তলায় রন্টির ছোট ভাইয়ের নিকট দিয়ে পুনরায় দোতলায় এসে দেখে কাজের মেয়ে আছমার স্বামী মুমিন একটি মোড়ার উপর উঠে ফ্যানে ওড়না বাঁধছে।

তারপর রন্টি, সানি ও তোরা মিলে ভিকটিম বিথীর মৃতদেহ উঁচু করে ধরে ফ্যানে ঝুলিয়ে দেয়। বিথীকে হত্যার পর ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল স্বামী রন্টি ও তার পরিবারের লোকজন। পরে ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত থাকায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

এর আগে এ মামলার আরেক আসামি লিটনকে ময়মনসিংহ থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। গত ৪ জুন সে গাজীপুর আদালতে স্বীকারোক্তিমলূক জবানবন্দি দেন এবং হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন।

Share this post

scroll to top