সেই তিন মেয়ের পড়াশুনার দায়িত্ব নিল ময়মনসিংহের সন্তান লক্ষীপুরের ডিসি

DC-Anowarবিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রীর উপহার থাকার জন্য একটি ঘর ও জীবিকা নির্ভয়ের জন্য একটি নতুন নৌকা পেতে পাচ্ছেন লক্ষীপুরের সেই নৌকার মাঝি সংগ্রামী নারী মায়া বেগম। একই সঙ্গে তার ৩ মেয়ের পড়াশুনার চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগীতার আশ্বাস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

উল্লেখ্য, ময়মনসিংহের একই পরিবারের দুই কৃতি সন্তান দেশের দুই জেলার প্রশাসকের নেতৃত্বে রয়েছেন। তাদের মধ্যে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত আছেন বড় ভাই মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ছোট ভাই মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দ। মোঃ আনোয়ার হোছাইন আকন্দকে বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপ সচিব থেকে পদোন্নতি দিয়ে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা দুজনই ময়মনসিংহ সদরের বিদ্যাগঞ্জের কুষ্টিয়া নামা পাড়া গ্রামের বাবা কাশেম আলী ও মাতা সাজেদা খাতুন (রত্নগর্ভা) এর গর্বিত সন্তান।

বৃহস্পতিবার (০৪ মার্চ) দুপুরে লক্ষীপুরের জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ মায়ার হাতে নগদ ১০ হাজার অনুদানের চেক তুলে দেন। এসময় জেলা প্রশাসক এ ধরণের অন্য কারো খোঁজ ফেলে তাদের পাশে দাঁড়ানোরও আশ্বাস দেন তিনি।

এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সফিউজ্জামান ভৃঁইয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো: শাহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুম, মায়া বেগমের পিতা নুরুল আমিন, স্থানীয় ইউপি মেম্বার আলমগীর হোসেন, সাংবাদিক সাইদুল ইসলাম পাবেল, মো: রবিউল ইসলাম খান, জুনায়েদ আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে মায়াকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারসহ (১লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যায়ে ঘর) তার পরিবারের দায়িত্ব নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন । এ ছাড়া তার জীবিকার জন্য একটি নৌকা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। তাকে ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।
এসময় জেলা প্রশাসক মো: আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ঝড় বৃষ্টির মধ্যেও যে নারী খেয়া পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেটি উপলব্ধি করেই প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে তাকে জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দেয়ার স্বিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে তার তিন কন্যার উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন পূরণের দায়িত্বও নেয়া হয়েছে। সরকারি এ সহায়তার মাধ্যমে তাদের দারিদ্র বিমোচনসহ তিন কন্যার উচ্চ শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় মায়া ও তার পরিবারের প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করছে প্রশাসন।

এদিকে এমন খবরে মায়ার অনুভূতি জানতে চাইলে তিনি বেশ খুশি ও আনন্দিত হওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। একই অনুভূতি প্রকাশ করেন তার বাবা নুরুল আমিন ও ইউপি মেম্বার।

ল²ীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের তালহাটি গ্রামের ওয়াপদা খালে খেয়া পারাপার করে দিন যাপনসহ জীবন সংগ্রামে লড়ছেন মায়া বেগম। যাত্রীদের থেকে নেয়া টাকায় স্বামীর রেখে যাওয়া তিন কন্যা সন্তানকে নিয়ে ঢিমেতালে চলছিল তার সংসার। সম্প্রতি মায়ার সংগ্রামী জীবন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। নজর আসে জেলা/উপজেলা প্রশাসনের।

Share this post

scroll to top