সুন্দরবনের আগুন ২৪ ঘণ্টায় নেভানো যায়নি

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি এলাকায় লাগা আগুন ২৪ ঘণ্টাও নেভানো যায়নি। রাতে বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (৪ মে) সকাল থেকে আগুন নেভানোর কাজ আবার শুরু হয়েছে।

সোমবার (৩ মে) বেলা ১১টার দিকে দাসের ভারানি এলাকায় আগুন লাগে। বিকেল পর্যন্ত তা দুই একর এলাকায় মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো। রাতে তা আরও বিস্তৃত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

সোমবার সন্ধ্যার পর বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর কাজ বন্ধ রাখে। তবে রাতে প্রকৃতি সহায় হওয়ায় আগুন বেশিদূর বিস্তৃত হতে পারেনি। বনরক্ষীদের কলমতেজী টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনে রাতে ৮/১০ মিনিট বৃষ্টি হয়। এতে আগুনের তেজ অনেকটা কমে আসে। যদি আরও কিছুক্ষণ বৃষ্টি হতো, তবে আগুন নিভে যেতো। এখন ফায়ার লাইন কাটা শেষ হয়েছে। ফায়ার সাভিসের কর্মীরা পানি ছিটানো শুরু করবে। এতে আগুন পুরোপুরি নিভে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সরেজমিনে সুন্দরবনে গিয়ে দেখা গেছে, আগুনের উৎপত্তিস্থল থেকে কয়েক একরজুড়ে স্থানে স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে শুকনো পাতা, গুল্মে আগুন জ্বলে উঠছে। সঙ্গে সঙ্গে তা নিভিয়ে ফেলছেন কর্মীরা।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বাগেরহাটের উপসহকারী পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, লোকালয় থেকে ৬ থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে বনের ভেতরে আগুন লাগে। সেখান থেকে চার কিলোমিটারের মধ্যে পানির উৎস নেই। ফলে আগুন লাগার পর থেকে পানি ছিটানো সম্ভব হয়নি। তবে পানির জন্য পাইপ লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন থেকে ঘণ্টা খানেকের মধ্যে পানি ছিটাতে সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। যতদ্রুত সম্ভব আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলার চেষ্টা করছেন তারা।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখেলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, লোকালয়ের লোকজন, ফায়ার সার্ভিসের কর্মৗ, বনবিভাগের কর্মীরা আবার আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছেন। তিনি আশা করেন, আজকের মধ্যে আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের শরণখেলা রেঞ্জের শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান সোমবার বলেন, সুন্দরবনের মধ্যে শুকনো পাতার স্তূপ রয়েছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রায় প্রাকৃতিকভাবে এই আগুন ধরতে পারে।

সুন্দরবন সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আছাদুজ্জামান মিলন বলেন, সুন্দরবনে বার বার আগুন লাগার ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। আগুন লাগার কারণ স্পষ্টভাবে জানা যায় না। যখন আগুন লাগে, তখন দায়সারা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগুন লাগার মূল রহস্য উদঘাটন হওয়া জরুরি। ভবিষ্যতে যাতে আগুন না লাগে সেই ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের এই অগ্নিকাণ্ড মানবসৃষ্ট কি না তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন।

Share this post

scroll to top