সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে আসছে ভারতীয়রা : স্বীকার করল বিএসএফ

ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক : ভারত থেকে বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসা মানুষের সংখ্যা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি ওয়াই বি খুরানিয়া। তিনি জানান, ২০২০ সালে এখনও পর্যন্ত সীমান্ত ডিঙিয়ে আসা-যাওয়ার সময় মোট ২৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে ৯০ শতাংশই বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়েছে। সংখ্যাটা কম হলেও, গত কয়েক বছরের নিরিখে বাংলাদেশে পালানোর সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে তাঁর দাবি। তিনি আরও জানান, সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে চলে যাওয়ার ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙার কাছেই সর্বাধিক।

কিন্তু, কেন বাংলাদেশে পালানো বৃদ্ধি পাচ্ছে? সেবিষয়ে বিএসএফের তরফে কোনও মন্তব্য না করা হলেও, বিশেষজ্ঞমহলের দাবি সিএএ, এনআরসি আতঙ্কের কারণেই এরকম হচ্ছে। বিএসএফের তথ্য সেই ইঙ্গিতকে আরও নিশ্চিত করছে। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তের প্রায় ৯১৩.৩২ কিলোমিটার এলাকার বেশিরভাগই অরক্ষিত। সেরকমই এলাকার ২০টি জায়গাকে ইতিমধ্যে তারা চিহ্নিত করেছে। এইসব এলাকা দিয়েই চোরাপথে যাতায়াত ক্রমশ বাড়ছে। বিএসএফের সূত্র বলছে, বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা প্রচুর পরিমাণে দক্ষিণ ভারতে বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যাচ্ছে। ২০১৮ সালের বিএসএফের তথ্য বলছে, বেআইনিভাবে সীমান্ত পার হওয়ার সময় ১৬৭৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এর মধ্যে অধিকাংশই অনুপ্রবেশের সময় ধরা পড়েছিল। ২০১৯ সালে সেই সংখ্যাটা বেড়ে ২১৯৪ জন হয়েছে। বিএসএফের সূত্র বলছে, এর মধ্যে অধিকাংশই আবার বাংলাদেশ পালানোর সময় ধরা পড়ে।

সীমান্ত এলাকার অধিকাংশ জায়গায় কাঁটাতার না থাকতেই, এই অনুপ্রবেশ হয়েছিল। এখন তারাই পালানোর চেষ্টা করছে। বিএসএফের সূত্র আরও বলছে, সীমান্ত এলাকায় যেসব দোকানঘর আছে, সেগুলি বিভিন্ন কারণে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে। কারণ বহু সময়ে নারী পাচার থেকে শুরু করে সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে এই সমস্ত দোকানকর্মীর যোগ খুঁজে পাচ্ছে বিএসএফ। বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এস এস গুলারিয়া জানান, ভোটের সময় সীমান্ত এলাকা থেকে প্রচুর বাহিনী তুলে নেওয়া হয়, তাতে সীমান্তের একটি বড় অংশের নজরদারি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। ফলে সেই সময়ে অরক্ষিত সীমান্ত এলাকাতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ বেড়ে যায়। অনুপ্রবেশের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, গত এক বছরে দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত এলাকাতে গোরু পাচারের সংখ্যা অনেক কমেছে বলেই দাবি বিএসএফের। কিন্তু সেই জায়গায় নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে মাথাচাড়া দিয়েছে ইয়াবা ট্যাবলেট। এই বিষয়ে বিএসএফের দাবি, ২০১৮ সালে একটি ইয়াবা ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত না হলেও ২০১৯ সালে ৪২ হাজার ২৩টি ইয়াবা ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আর চলতি বছরে ইতিমধ্যেই ১০ হাজার ইয়াবা মাদক ট্যাবলেট উদ্ধার করা গিয়েছে। ফলে দক্ষিণবঙ্গের সীমান্ত এলাকাতে এই মুহূর্তে বিএসএফের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখা দিয়েছে এই মাদক পাচার। তাই এবিষয়ে বিশেষ নজরদারি শুরু করেছে বলে বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে। সূত্র : ভারতীয় গণমাধ্যম বর্তমান পত্রিকা

Share this post

scroll to top