সরফরাজের নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুদ্ধ পিসিবি

বর্ণবাদী মন্তব্যের জেরে অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদকে চার ম্যাচ নিষিদ্ধ করায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রতি প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রোটিয়া অলরাউন্ডার আন্দিলে ফেলুকুওয়াওকে উদ্দেশ্য করে তীব্র বর্ণবাদী মন্তব্য করেছিলেন সরফরাজ। পরবর্তীতে সরফরাজ বিষয়টি বুঝতে পেরে ফেলুকুওয়াওর কাছে দু:খ প্রকাশ করেও পার পাননি। আইসিসি’র নিষেধাজ্ঞায় ঠিকই পরতে হয়েছে ৩১ বছর বয়সী এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানকে। এর আগে টুইটারেও তিনি এ ব্যপারে দু:খ প্রকাশ করেন।

জোহানেসবার্গে চতুর্থ ওয়ানডের আগে সরফরাজকে নিষিদ্ধ করে আইসিসি। যে কারণে ম্যাচটিতে তার পরিবর্তে পাকিস্তানের অধিনায়কত্ব করেন শোয়েব মালিক। এই সফরে স্বাভাবিকভাবেই আর খেলা হচ্ছে না সরফরাজের।

পিসিবি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘সরফরাজের বিপক্ষে আইসিসি’র সিদ্ধান্তের প্রতি পিসিবি তীব্র হতাশা প্রকাশ করছে। দুই খেলোয়াড় ও বোর্ডের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি হলে এই ধরনের শাস্তি মেনে নেয়া যায় না। সরফরাজ প্রকাশ্যে দু:খ প্রকাশ করার পর তা মেনে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড। পিসিবিও এই ধরনের বর্ণবাদী মন্তব্য ও আচরনের বিপক্ষে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে।’

সরফরাজের সাথে আলোচনা করে তাকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিসিবি। ওয়ানডে সিরিজের বাকি ম্যাচগুলো ও টি-২০ সিরিজে তার পরিবর্তে শোয়েব মালিক অধিনায়কত্ব করবেন। ইতোমধ্যেই টি-২০ দলে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

কী ঘটেছিল?

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডের ৩৭তম ওভারের ঘটনা। উইকেটকিপিংয়ের সময় প্রোটিয়া অলরাউন্ডার আন্দিল ফেলুকায়োকে উদ্দেশ করে বর্ণ বৈষম্যমূলক মন্তব্য করেন সরফরাজ। ব্যাটিংয়ে ব্যস্ত ফেলুকায়োকে ‘কালো’ বলে সম্বোধন করেন তিনি, যা ধরা পড়েছিল স্টাম্প মাইক্রোফোনে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি ভাইরাল হয়ে যায়। সমালোচনার ঝড় উঠে। পরে সামাজিক মাধ্যমে এর জন্য ক্ষমা চান সরফরাজ। ক্ষমা পেয়ে যান তিনি।

তবে প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু’‌প্লেসিস এ কথাও জানিয়ে দেন যে, ‘‌সরি বলেছে বলেই আমরা ক্ষমা করে দিয়েছি ওকে। এই মন্তব্যের দায়িত্ব সরফরাজ নিয়েছে। এখন এটা আর আমাদের হাতে নেই। ব্যাপারটা আইসিসি দেখছে।’‌

তিনি আরো বলেন, ‘‌দক্ষিণ আফ্রিকায় এলে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য করার সময় সতর্ক থাকতেই হবে। আমি নিশ্চিত যে সরফরাজ এটা ফেলুকায়োকে উদ্দেশ্য করে বলেনি। তবে তার এই মন্তব্যের দায়িত্ব নিয়েছে। এখন দেখতে হবে এর পরিণতি কী হয়। আমরা এটাকে একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছি না।’‌

সরফরাজের ক্ষমা চাওয়ার পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও (পিসিবি) আনুষ্ঠানিক এক বিবৃতির মাধ্যমে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। কিন্তু আইসিসি শাস্তির সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। তদন্ত করে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় রোববার সরফরাজের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

এর ফলে দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজের বাকি দুটি ওয়ানডে এবং ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া টি-২০ সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ খেলতে পারবেন না সরফরাজ।

Share this post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top