সবজির বাজারে এখনো বন্যার প্রভাব

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এখন চলছে শরৎ। সাধারণত এই সময়ে শীতের আগাম সবজি বাজারে চলে আসে। ফলে কমতে থাকে সবজির দাম। কিন্তু রাজধানীর বাজারে এখনো অধিকাংশ সবজির দাম চড়া। এর কারণ হিসেবে বিক্রেতারা দোষ দিচ্ছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হয়ে যাওয়া বন্যাকে। আর ক্রেতারা দুষছেন মনিটরিং ব্যবস্থাকে।

শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁও বাজারে দেখা যায়, টমেটো, গাজর, বেগুনের দাম মানভেদে একশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে গাজর ও বেগুনের দাম ওঠানামা করছে। তবে টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। এছাড়া বাড়তির মধ্যে রয়েছে বরবটি, করলা, মিষ্টিকুমড়ার দাম। বিভিন্ন রকমের শাকের দামও বাড়তি।

বিক্রেতারা জানান, কাঁচামরিচের দাম গত তিন মাস ধরেই চড়া। এর মধ্যে গত দু’তিন সপ্তাহে দাম কিছুটা কমলেও এখন বাড়তি দামেই স্থির রয়েছে কাঁচামরিচ (২৫০-৩০০ টাকা কেজি)। এর কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বন্যার প্রভাবে সরবরাহের অভাবকে দায়ী করছেন।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁকরোল, পটল। চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বর্ষা শেষ হলেও এখনো বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। যার প্রভাব রয়েছে দামে। এ বাজারে এক কেজির ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে হাজার টাকায়। ৭৫০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৮৫০ টাকা কেজি দরে। আর ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে ৫০০-৬৫০ টাকায়।

আব্দুল কাদের নামে রাজবাড়ী জেলার একজন ক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহে আমি বাড়ি ছিলাম। সেখানে যে দামে সবজি কিনেছি, ঢাকায় তার প্রায় দ্বিগুণ দাম। পরিবহনে কত টাকাই আর যোগ হয়? আসলে বাজার তদারকির অভাবে সবাই ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে।

ঝর্না রহমান নামের অপর এক ক্রেতা বলেন, আমাদের দেশের নিয়মই যেন হয় গেছে- সুযোগ পেলেই ব্যবসায়ীরা বাড়তি দাম নেবে। এটা তারাও জানে যে, মানুষ এগুলো বোঝে, কিন্তু সাধারণ মানুষের তো করার কিছু থাকে না। আমার মতে দেশে স্থায়ী বাজার তদারকি সিস্টেম চালু করা দরকার।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ’র (টিসিবি) উপ-ঊর্ধ্ব কার্যনির্বাহী মো. হুমায়ুন কবির বলেন, টিসিবি প্রতিনিয়ত ঢাকা মহানগরীর সর্বশেষ খুচরা বাজার দর প্রকাশ করে। বৃহস্পতিবারের বাজার দর নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানীর ১৩টি বাজার থেকে। এতে দেখা গেছে- সয়াবিন তেল (খুচরা), মুরগি (ব্রয়লার), মশুর ডাল, আদা, রসুন এবং পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। চাল (মোটা), আলু, এলাচ, প্যাকেট আটা, ধনেপাতা, তেজপাতা, জিরা, দারুচিনির দাম কমেছে।

তিনি বলেন, টিসিবি থেকে যে বাজারদর নির্ধারণ করা হয়, তা বিভিন্ন বাজারে ঠিক রয়েছে কি না তা বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে তদারকি করা হয়। তবে সরবরাহ ব্যবস্থায় যে বিঘ্ন ঘটার কথা বলা হচ্ছে, আমরা আশা করছি এটি শিগগিরই সমাধান হবে।

Share this post

scroll to top