শ্রীপুরে শতাধিক বাড়ি ভাংচুর-লুটপাট

মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর এমপি। মঙ্গলবার শ্রীপুর উপজেলার খোর্দ্দরহুয়া ও সরইনগর গ্রামে ভাংচুর হওয়া এলাকা পরিদর্শন করেছেন তিনি। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী স্থানীয় শ্রীকোল ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রামের বিচারের দাবি জানিয়ে শ্লোগান দেন।

পরিদর্শনকালে মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আহসান হাবীব, শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মিয়া মাহমুদুল গণি শাহিন, থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মাহবুবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক ও নাকোল ইউপি চেয়ারম্যান হুমাউনুর রশিদ মুহিতসহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সাথে ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার ঈদের নামাজের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় অন্তত শতাধিক বাড়ি-ঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে ৫ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন নারী-পুরুষ আহত হয়। আহত গ্রামবাসীদের মধ্যে ৪ জনকে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সে সময় শতাধিক শর্টগানের গুলি ছোড়ে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শ্রীকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমীর হোসেন মোল্ল্যার সাথে স্থানীয় আবু বক্কার মোল্ল্যা, হাফিজুর রহমান, কনা, শাহিনুর রহমান ও আবু সাঈদ মণ্ডলের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। এরই জের ধরে আওয়ামী লীগের সভাপতি আমীর মোল্ল্যার প্রতিপক্ষ স্থানীয় সামাজিক দলের ওই পাঁচ নেতা শ্রীকোল ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম মোস্তাসিম বিল্লাহ সংগ্রাম এর নেতৃত্বে এ ভাংচুর ও লুটপাটের তাণ্ডবলীলা চালায় বলে এলাকাবাসী জানায়।

ঘটনার বিষয়ে সরইনগর গ্রামের শ্রীকোল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: আমীর আলী মোল্ল্যা বলেন, খোর্দ্দরহুয়া গ্রামের ঈদগাহে ঈদের নামাজ শেষে টাকা তোলা ও নাম ঘোষণার সময়ে হঠাৎ আমার প্রতিপক্ষ আবু বক্কার তার লোকজন দিয়ে আমার সমর্থক নুরুল হোসেন, ওসমান, আবু, হারেজসহ বেশ কয়েকজন লোককে পিটিয়ে আহত ও কুপিয়ে জখম করে। এর কিছুক্ষণ পরেই শ্রীকোল, পূর্ব শ্রীকোল, খোর্দ্দরহুয়া, রামনগর, মিনগ্রাম-এই পাঁচ গ্রামের দেড় দুই হাজার লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে আমার গ্রামে এসে আমার নিজের বাড়িসহ আমার সমর্থকদের শতাধিক বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।

শ্রীকালে ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ড সদস্য মো: ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্রথমে ঝামেলা হলো খোর্দ্দরহুয়া গ্রামে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই এক দেড় কিলোমিটার দূরের সরইনগর গ্রামের ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমীর আলী মোল্ল্যার সমর্থক মোহন শেখ, নেকবর মোল্ল্যা, নজরুল শেখ, জহুর ফকির, আহম্মদ ফকির, লিয়াকত মণ্ডল, রেজাউল মোল্ল্যা, আজিজ মোল্ল্যা, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই, মুক্তিযোদ্ধা সিতাম, খালেক মোল্ল্যাসহ শতাধিক বাড়িঘরে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি বাড়ির আসবাবপত্র, ছাগল ও গরু লুট করা হয়।

শ্রীপুর থানার ওসি মো: মাহাবুবুর রহমান বলেন, চার-পাঁচটি গ্রাম থেকে একযোগে প্রচুর লোক এসে সরইনগন গ্রামে হামলা করে ভাংচুর করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের শতাধিক শর্টগানের গুলি ছোড়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মাগুরার পুলিশ সুপার খান মো: রেজোয়ান বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ইতোমধ্যে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। লুটকৃত ৫টি গরু উদ্ধার করা হয়েছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র: নয়া দিগন্ত

Share this post

scroll to top