লাইফস্টাইল
শরীর কেন চুলকায়? চুলকানো কি উচিৎ?
শরীর কেন চুলকায়- এই রহস্য খুব কমই উদঘাটিত হয়েছে বা উদঘাটনের চেষ্টা করা হয়েছে।
কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞানের এই দিকটি মানুষের মস্তিস্কের গতিবিধি বা আচরণ নিয়ে বিস্ময়কর কিছু তথ্য হাজির করেছে।
চুলকানি নিয়ে নীচের ১০টি তথ্য আপনাকে বিস্মিত করবে:
১. আপনি দিনে প্রায় ৯৭ বার সেখানে চুলকান:
গবেষণা বলছে, আমরা দিনে কমবেশি ১০০ বার চুলকাই।
এই লেখাটি যখন পড়ছেন, তখনও হয়তো আপনার শরীরের কোথাও চুলকাচ্ছে। চুলকে ফেলুন, কেউ দেখবে না।
২. পশু বা গাছের সংস্পর্শে চুলকানি
কখনো কখনো কোনো পশু বা বৃক্ষ-লতার সংস্পর্শে শরীরে চুলকানি শুরু হয়ে যায়।
এর কারণ এগুলো থেকে নিঃসরিত বিষ চামড়ায় লেগে হিস্টামিন নির্গত হয়।
সাথে সাথে স্নায়ুকোষ তার ফাইবারের মাধ্যমে মস্তিস্কে চুলকানির বার্তা পাঠায়।
৩. চুলকানির নিজস্ব স্নায়ু নেটওয়ার্ক :
কিছুদিন আগ পর্যন্ত মানুষের ধারণা ছিল, একই পথ দিয়ে চুলকানি এবং ব্যথার সিগন্যাল মস্তিষ্কে পৌছায়।
কিন্তু ১৯৯৭ সালে এক গবেষণায় দেখা যায় চুলকানির স্নায়ুর ফাইবার পৃথক।
৪. চুলকানির সিগন্যালের গতি মন্থর:
একেক স্নায়ু ফাইবারের একেক গতি :
স্পর্শের সিগন্যালের গতি ঘণ্টায় ২০০ মাইল।
দ্রুত ব্যথা (যখন আপনি অসাবধানে গরম হাড়িতে হাত দেন) ৮০ মাইল বেগে চলে।
কিন্তু চুলকানির গতি ঘণ্টায় দুই মাইল- হাঁটার গতির চেয়ে মন্থর।
৫. চুলকানি সংক্রামিত হয়:
ইঁদুররা চুলকাচ্ছে -এমন একটি ভিডিও আরেক দল ইঁদুরকে দেখিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা।
দেখেই ঐ ইঁদুররা চুলকাতে শুরু করেছিল।
৬. সুপ্রাকিয়াসম্যাটিক নিউক্লিয়াস নামে মস্তিস্কের ক্ষুদ্র একটি অংশ চুলকানির সংক্রমণের জন্য দায়ী:
বিজ্ঞানীদের এখনো কোনো ধারনা নেই যে কীভাবে মস্তিষ্ক একজনের চুলকানি দেখে আরেকজনকে চুলকাতে উৎসাহিত করে।
৭. চুলকিয়ে চামড়া রক্ষা করা যায়:
কীট-পতঙ্গ বা বিষাক্ত লতাগুল্মের স্পর্শে প্রতিক্রিয়া হলে চুলকিয়ে তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
চুলকানোর সময় আপনার রক্তের শিরা প্রসারিত হয়। ফলে নিঃসরিত হয় শ্বেত কনিকা যা বিষের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।
৮. মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের নিঃসরণ:
চুলকালে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরিত হয়। ফলে পরিতৃপ্তির অনুভূতি হয়।
বোঝাই যায়, কেন চুলকানির থামানো এত কঠিন।
৯. চুলকানোর সবচেয়ে উত্তম জায়গা গোড়ালি:
২০১২ সালে ব্রিটেনে এক গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, গোড়ালিতে চুলকানির ঝোঁক সবচেয়ে বেশি এবং সেখানে চুলকালে তৃপ্তিও পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি।
গোড়ালি চুলকিয়ে দেখুন একবার।
১০. যত চুলকাবেন, ততই চুলকানি তৈরি হবে:
চামড়ায় চুলকানোর সময় বেশি বেশি হিস্টামিন নিঃসরিত হয়। ফলে আরো চুলকাতে ইচ্ছা করে।
এই চক্র সম্পর্কে সাবধান থাকুন।
কারণ বেশি চুলকালে চামড়ায় ক্ষত তৈরি হয়, জীবাণুর সংক্রমণও হতে পারে।
লাইফস্টাইল
মায়ের মানত পূরণ করতে ৭ বিয়ে করলেন যুবক
একটি, দুটি কিংবা তিনটি নয়, সাতটি বিয়ে করেছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার রবিজুল ইসলাম (৩৯) নামে এক ব্যক্তি। সাত বউকে নিয়ে সুখের সংসার তার। স্ত্রীরা মিলেমিশে থাকছেন একই বাড়িতে। মায়ের মানত পূরণ করতেই সাতটি বিয়ে করেন বলে জানা যায়।
রবিজুল ইসলাম কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের পাটিকাবাড়ী গ্রামের মিয়াপাড়ার আয়নাল হোসেনের ছেলে। তিনি ১৫ বছর লিবিয়াতে ছিলেন। দুই বছর আগে দেশে আসেন। লিবিয়াতে যাওয়ার আগে ১৯৯৯ সালে পারিবারিকভাবে করেন প্রথম বিয়ে। এরপর কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা লিবিয়া প্রবাসী হেলেনাকে ২ বিয়ে করেন ৷ তারপর দুই বছর আগে দেশে এসে একে একে করেন আরও পাঁচজনকে বিয়ে করেন রবিজুল।
তার স্ত্রীরা হলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হালসা গ্রামের রুবিনা খাতুন (৩৫), একই উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর এলাকার মিতা আক্তার (২৫), কিশোরগঞ্জের হেলেনা খাতুন (৩০), রাজশাহীর চাপাই এলাকার নুরুন নাহার (২৫), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকার স্বপ্না (৩০), একই উপজেলার ডম্বল পুর এলাকার বানু আক্তার (৩৫) ও কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ এলাকার রিতা আক্তার (২০)।
রবিজুল ইসলাম বলেন, আমি মা-বাবার একমাত্র ছেলে। আমার একটা সমস্যা ছিল। সেজন্য আমার মা মানত করেছিলেন, ‘ছেলে বেঁচে থাকলে তাকে সাতটি বিয়ে দিবেন’। তাই মায়ের সেই মানত পূরণ করতে আমি সাতটি বিয়ে করেছি। এতে আমি, আমার পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয়রা সবাই খুশি। সাতটি বউ-ই খুব ভালো। স্ত্রীদের পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয় না। সাত স্ত্রী ও ৫ সন্তান নিয়ে সুখের সংসার আমার। সব স্ত্রীরা আমার আদর যত্ন নেন এবং খুব ভালোবাসেন। সারাদিন সবাই একসঙ্গে কাজ করেন। সপ্তাহের সাত রাতে সাত বউয়ের কাছে থাকি। এতে কোনো সমস্যা হয় না।
তিনি আরও বলেন, আমি ১৫ বছর লিবিয়াতে ছিলাম। গত দুই বছর আগে দেশে এসেছি। বর্তমানে আমার একটি ড্রাইভিং শেখার সেন্টার আছে। এ ছাড়া কয়েকটি মাইক্রোবাস রয়েছে। আমি এখন ড্রাইভিং শিখাই।
জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে রুবিনাকে বিয়ে করেন রবিজুল ইসলাম। এই দম্পত্তির দুই ছেলে রয়েছে। এরপর লিবিয়ায় থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে হেলেনাকে বিয়ে করেন। এ স্ত্রীর ঘরে এক ছেলে ও এক মেয়ে। করোনার সময় ২০২০ সালে নুরুন নাহারকে বিয়ে করেন। তার এক মেয়ে আছে। ২০২২ সালে বিয়ে করেন স্বপ্নাকে। তিন মাস আগে বানুকে, আড়াই মাস আগে রিতাকে এবং দুই মাস আগে মিতাকে বিয়ে করেন। সব বিয়েই করেন সম্পর্ক ও পারিবারিকভাবে।
স্থানীয়রা বলেন, রবিজুল ইসলাম সাতটি বিয়ে করেছেন। সাত বউ নিয়ে একই বাড়িতে বসবাস করেন। সাত বউ মিলেমিশে সংসার করে। এলাকার মানুষ তাদের বাড়িতে বেড়াতে যায়। তারা ভালোই আছে।
তার স্ত্রীরা বলেন, আমরা সাত বোনের মতো। আমরা সারাদিন মিলেমিশে সংসারের কাজ করি। সবার সঙ্গেই সবার ভালো সম্পর্ক। বোনের মতো এক বাড়িতে বসবাস করি। কেউ কাউকে হিংসা করি না। কে কম কাজ করল বা বেশি করল, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো সমস্যা হয় না। আমরা জেনে শুনেই বিয়ে করেছি। আমাদের স্বামী এমন কিছু করেন না যাতে আমাদের মন খারাপ হবে। স্বামী খুবই ভালো মানুষ।
লাইফস্টাইল
ডিজিটাল আসক্তি ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে : জরিপ
করোনা পরবর্তী একাডেমিক চাপের কারণে বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও গঠনমূলক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে মোট শিক্ষার্থীর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। সেইসাথে শিক্ষার্থীদের প্রায় ৪৭ শতাংশের করোনার আগের তুলনায় পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। ডিজিটাল আসক্তি প্রায় ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এমনই কিছু বিষয় উঠে এসেছে বেসরকারি সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের জরিপে।
‘করোনা-পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একাডেমিক চাপের প্রভাব এবং তাদের আত্মহত্যার প্রবণতা’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদনটি শনিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।
ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ড. মো: মাহমুদুর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মো: শাহনেওয়াজ খান চন্দন এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তানসেন রোজ।
জরিপের তথ্য উল্লেখ করে আঁচল ফাউন্ডেশন জানায়, গত ৯ মাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মহত্যার প্রবণতা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে ৪০৪ জন শিক্ষার্থী। এর মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৫৭ জন, স্কুলের ২১৯ জন, মাদরাসার ৪৪ জন, কলেজ শিক্ষার্থী ৮৪ জন। যার মাঝে নারী শিক্ষার্থী ছিল ২৪২ জন এবং পুরুষ শিক্ষার্থী ১৬২ জন।
সংগঠনটি জানিয়েছে, করোনা পরবর্তী বেড়ে যাওয়া আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে এবারের জরিপটি পরিচালনা করেছে তারা। শিক্ষার্থীদের উপর একাডেমিক চাপ তাদের আত্মহত্যার পেছনে কতটুকু দায়ী এবং অন্যান্য কী কী কারণ জড়িত সে লক্ষ্যেই একটি গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়।
জরিপটির নানাবিধ উল্লেখযোগ্য ফলাফল তুলে ধরেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহকারী প্রফেসর ও আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক আব্দুল ওহাব।
তিনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিপে মোট অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ৬৭.৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২৩.৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের, অন্যান্য ২.২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এবারের জরিপটিতে ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ১৬৪০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। জরিপটিতে অংশগ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুষ শিক্ষার্থী ও নারী শিক্ষার্থী ছিলেন যথাক্রমে ৪৩.৯ এবং ৫৬.১ শতাংশ। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে ৯২.৭৪ শতাংশ অবিবাহিত, ৬.৭৭ শতাংশ বিবাহিত এবং মোট ০.৪৯ শতাংশ বিধবা, বিপত্নীক অথবা তালাকপ্রাপ্ত।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ধরন বিবেচনায় জরিপে মোট অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ৬৭.৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২৩.৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের, ২.২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে ৬.০৪ শতাংশ, কারিগরি হতে ০.৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং মাদরাসা থেকে ০.১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী গবেষণাটিতে অংশগ্রহণ করেছেন।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৯.৮২ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষের। দ্বিতীয় বর্ষের ২৩.৮৪, তৃতীয় বর্ষের ২৩.২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং চতুর্থ বর্ষের মোট ১৬.৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের মতামত প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও মাস্টার্সে অধ্যয়নরত ৬.৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থী আমাদের জরিপটিতে অংশ নিয়েছেন।
দুই-তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী একাডেমিক চাপের সম্মুখীন
জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়. ৭৫.৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা করোনা পরবর্তী একাডেমিক চাপের কারণে বিভিন্ন ধরনের মানসিক এবং গঠনমূলক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন; সামগ্রিকভাবে যা মোট শিক্ষার্থীদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ। এক্ষেত্রে, শিক্ষার্থীদের এসব মানসিক অবস্থার পেছনের দায়ী কারণগুলোর মাঝে অন্যতম হচ্ছে- দীর্ঘ বিরতির ফলে সৃষ্ট সেশনজট, পড়াশোনায় অনীহা, পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে হতাশা, শিক্ষাঙ্গনে পঠিত বিষয় বুঝতে না পারা ইত্যাদি।
একাডেমিক চাপের ধরন
পড়াশোনাকেন্দ্রিক চাপের ধরন জানতে চাইলে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৪৬.৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানান, করোনার আগের তুলনায় পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ কমে গেছে। ১০.৩০ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তাদের ঘন ঘন পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হচ্ছে যার ফলে তারা খাপ খাওয়াতে পারছেন না। পরীক্ষার সময়ের চেয়ে সিলেবাসের আধিক্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
২০.৭৩ শতাংশ জানিয়েছেন স্বল্প সময়ে এত বড় কোর্স শেষ করার ফলে তারা পড়া বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এবং ৬.৭১ শতাংশ জানান, পড়াশোনার চাপের জন্য তারা পরিবারকে সময় দিতে পারছেন না যা তাদের মনোবেদনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
করোনা-পরবর্তী জীবনে বেড়েছে ভয় ও আশঙ্কা
মানসিক স্বাস্থ্য শিক্ষাজীবনের সাথে ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত। জরিপে মানসিক সুস্থতা বিষয়ক বেশ কয়েকটি নিয়ামক নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হলে উত্তরে উঠে আসে উদ্বেগজনক কিছু তথ্য। মোট অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৭.৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের নিজস্ব শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অতিরিক্ত ভয় ও উদ্বেগ তাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে। এর পাশাপাশি দৈনন্দিন আচার-আচরণ ও ব্যবহারে পরিবর্তন, যেমন- মন খারাপ হওয়া, হঠাৎ ক্লান্তি আসা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শিক্ষাজীবনে প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ৮০.৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী।
ডিজিটাল/ইলেকট্রনিক ডিভাইস আসক্তি বাড়াচ্ছে মানসিক সমস্যা
ডিজিটাল ডিভাইস যেমন- মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেস্কটপ, আমাদের জীবনকে সহজ করে তুললেও এর উপর অতিরিক্ত আসক্তি ও নির্ভরতা শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে জানিয়েছেন ৭০.৭৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
আবার মানসিক সমস্যাজনিত কারণে নিত্যদিনের ঘুমের অভ্যাসে যে পরিবর্তন যেমন- অতিরিক্ত ঘুম অথবা নিদ্রাহীনতা এসেছে তাতে ৭১.৭১ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন ধাপে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ডিজিটাল ডিভাইসে নির্ভরশীল হয়ে পড়ার ক্ষেত্রে কতটুকু সতর্ক হওয়া দরকার তা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে।
নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার হারও বেড়েছে
ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন যেমন- হঠাৎ চুপচাপ হয়ে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে নেয়া, বহির্মুখী (এক্সট্রোভার্ট) কিংবা আত্মকেন্দ্রিক (ইন্ট্রোভার্ট) হয়ে উঠার প্রবণতাও শিক্ষাজীবনকে অনেকাংশেই প্রভাবিত করছে বলে জানিয়েছেন ৪৭.৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী। ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন মানসিক সমস্যার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে মনে করা হয়। তাই হঠাৎ করে অন্তর্মুখী হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
অভিভাবকদের অযাচিত চাপে শিক্ষার্থীরা
অভিভাবকদের একটি সহজাত প্রবৃত্তি হচ্ছে সন্তানদের পড়াশোনার ব্যাপারে তারা অতিমাত্রায় সতর্ক। তবে এই মনোভাব সন্তানদের জীবনে কেমন প্রভাব ফেলছে তা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে এবার। সন্তানদের প্রতি তাদের এই অতিরিক্ত স্বপ্ন বা প্রত্যাশার চাপ ৫৫.৪৩ শতাংশ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে আছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন পরিবার থেকে তৈরি হওয়া অযাচিত চাপ তাদের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করে তুলছে।
একাডেমিক চাপে নাজেহাল ৭৭.০১ শতাংশ
করোনা-পরবর্তী বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত পড়াশোনা এবং কম সময়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠ্যক্রম শেষ করার জন্য এক ধরনের চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এটি ৭৭.০১ শতাংশ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছেন বলে উঠে এসেছে এবারের সমীক্ষায়। একইসাথে একাডেমিক পরীক্ষাগুলোর মধ্যবর্তী সময় এবং মানসিক চাপ কাটিয়ে উঠার সুযোগ কম থাকায় ৬৭.১৩ শতাংশ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রকম মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
অন্যদিকে দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষাক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন আসায় ৭৩.৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মবিশ্বাস আশঙ্কাজনক হারে কমে এসেছে। শিক্ষাজীবনে বাধা সৃষ্টির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পড়াশোনা এবং সিলেবাস দ্রুত শেষ করার চাপে ৬৬.৭১ শতাংশের জীবন প্রভাবিত হয়েছে বলেও সমীক্ষায় উঠে আসে।
ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা ও অনিশ্চয়তা
পড়াশোনা শেষ করে সকল শিক্ষার্থীই চায় ভালো চাকরি করবে। করোনার প্রভাবে তৈরি হওয়া বিভিন্ন কারণ তাদের প্রত্যাশায় ছেদ টানতে বাধ্য করেছে। ৭৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন চাকরি ক্ষেত্রে ভবিষ্যত ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং অনিশ্চয়তার কারণে মানসিক চাপে আছেন। এর মধ্যে ৭২২ জন মেয়ে ও ৫৩৫ জন ছেলে রয়েছে। এতে দেখা যায় যে, তুলনামূলকভাবে মেয়েরা ক্যারিয়ার নিয়ে বেশি চিন্তিত।
পরীক্ষার ফলাফল ভালো না হওয়ার ভয়
শিক্ষার্থীরা পরবর্তী সেমিস্টার বা পাঠ্যক্রমেও এক ধরনের শঙ্কা নিয়ে এগোচ্ছে। জরিপের অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে জানা যায় পরীক্ষার ফলাফল ভালো না হওয়ার ভয়ে থাকছেন ১২৭৪ জন বা ৭৭.৬৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনার ফলে দীর্ঘদিন পরাশোনা থেকে দূরে থাকা, আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া, পড়াশোনায় আগের মতো মন না বসাতে পারা এর পিছনে দায়ী।
সেশনজটের শিকার ৬৩.৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী
আঁচল ফাউন্ডেশনের এবারের জরিপে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ৬৩.৪১ শতাংশ শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেয়াদে সেশনজটের শিকার হয়ে আটকে পড়েছেন। এদের মাঝে ৪২.৫৬ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা নূন্যতম এক বছর সেশনজটের শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ দেশের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী ন্যূনতম এক বছর শিক্ষাজীবনে পিছিয়ে পড়েছেন। আবার দুই বছর সেশনজটের শিকার হয়েছেন ১৩.১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়া ছয় মাস ও অন্যান্য মেয়াদে ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী এর ভুক্তভোগী।
সেশনজটের শিকার হওয়ায় পারিবারিক ও সামাজিক চাপ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ৬১.৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী।
মনের কথা বলার মতো শিক্ষক পান না
শিক্ষকদের সাথে নিজের সমস্যা শেয়ার করা যায় কি না জানতে চাওয়া হলে ৭৪.৫১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা নিজেদের মানসিক সমস্যাগুলো শেয়ার করার মতো শিক্ষক পান না। মাত্র ২৫.৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মন খুলে কথা বলার জন্য শিক্ষকদেরকে পাশে পান।
জরিপ অনুযায়ী দেখা গেছে, যারা শিক্ষকদের সাথে নিজেদের সমস্যা শেয়ার করতে পারেন না তাদের ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ও আত্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে ৭৪.০০ শতাংশ শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। যারা সমস্যা শেয়ার করতে পারেন তাদের ৬৭.৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থীরই মানসিক স্বাস্থ্য তুলনামূলক ভালো অবস্থায় আছে। তাই শিক্ষকরা যেন বন্ধুত্বভাবাপন্ন হন সেই বিষয়ে আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে।
শিক্ষার পরিবেশে অসন্তোষও মানসিক চাপের কারণ
পড়াশোনার সঠিক পরিবেশ একজন শিক্ষার্থীকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারে। তাই আমরা জানতে চেয়েছিলাম শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়াশুনার পরিবেশ নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট। ৫৩.৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, পড়াশোনার জন্য তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান পরিবেশ সহায়ক নয়। যার ফলে তারা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ক্যারিয়ার ভাবনায়ও বিপদ সংকেত
শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যারিয়ারকেন্দ্রিক ভাবনায় সবচেয়ে এগিয়ে রাখছে সরকারি চাকরিকে। ৩৮.৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থী সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত হতে চান। আবার ৩১.১০ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে ক্যারিয়ার গড়তে চান। বেসরকারি চাকরি করতে আগ্রহী মাত্র ৮.৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী। অন্যদিকে ব্যবসা ও ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে নিজের কর্মসংস্থান গড়তে চান ১০.০৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর সরকারি চাকরি পাওয়ার ঝোঁক কিছুটা ভীতি জাগানিয়া। কারণ এদের মাঝে যারা সরকারি চাকরি পেতে ব্যর্থ হবেন তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারেন। এছড়া বেসরকারি কর্মসংস্থানের সুযোগ সবচেয়ে বেশি থাকলেও শিক্ষার্থীদের এই সেক্টরে অনীহার কারণ খুঁজে বের করা জরুরি।
করোনা-পরবর্তী শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো
করোনা পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীদের জীবনে যে বিষয়গুলো সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে, তা হলো- পড়াশোনার অতিমাত্রায় চাপের সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা। ৩১.২৮ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা একডেমিক চাপের সাথে খাপ খাওয়াতে পারছেন না। নিজের বা পারিবারিক অর্থনৈতিক সংকটের চাপে আছেন ২১.০৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। ভালো চাকরি না পাওয়া নিয়ে চাপ বোধ করছেন ১৭.৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী, সহপাঠীদের দ্বারা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের কারণে হীনমন্যতায় ভুগছেন ৪.৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এছাড়া পার্টনারের সাথে মনোমালিন্য, বিয়ে নিয়ে অযাচিত চাপ এবং পারিবারিক ঝগড়া বিবাদজনিত চাপে আছেন ১৮.৪২ শতাংশ। আমরা জানতে চেয়েছিলাম এই চাপগুলো তাদের ব্যক্তিজীবনে কতটুকু প্রভাব বিস্তার করেছে। ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা এই চাপের কারণে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
জীবন নিয়ে অনেকেরই অভিযোগ
নিজের জীবন নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট এবং সবকিছু ঠিকমতো চলছে কী না এর উত্তরে বেশ কিছু উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। ১০.১৮ শিক্ষার্থী শেয়ার করেন জীবন নিয়ে তারা পুরোপুরি হতাশ। এমন কি বেঁচে না থাকার আকাঙ্ক্ষাও ব্যক্ত করেছেন। হতাশ হয়েও ভালো কিছুর চেষ্টা করে যাচ্ছেন ২৬.৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। ৫৩.৬০ শতাংশ জানান সবকিছু ঠিকমতো না চললেও কিছু বিষয়ে তারা সন্তুষ্ট।
মন খারাপে কাউকে পাশে পাওয়া কঠিন
মন খারাপ হলে বা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হলে সমস্যাগুলো কারো সাথে শেয়ার করতে হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি যে ৪৮.৮৪ শতাংশ শিক্ষার্থীই মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করার মতো কাউকে পাশে পান না। সমস্যাগুলো শেয়ার করতে না পারলে এটি ডিপ্রেশন কিংবা আত্মহত্যার মুখেও ঠেলে দিতে পারে।
আত্মহত্যার ভাবনা নিয়ে অশনি সংকেত
করোনা-পরবর্তী সময়ে ১৬৪০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৪০ জন বা ২.৪৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। আত্মহত্যার উপকরণ জোগাড় করেও শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে এসেছেন বলে জানিয়েছেন ৪.৭৬ শতাংশ শিক্ষার্থী। করোনা-পরবর্তী সময়ে আত্মহত্যার করার কথা মাথায় এসেছে ৩৪.১৫ শতাংশ শিক্ষার্থীর।
শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির জন্য দায়ী যে সমস্যাগুলো জরিপে উঠেছে এসেছে তা মোটামুটি চার ধরনের- একাডেমিক চাপ, আর্থিক সংকট ও ক্যারিয়ার দুশ্চিন্তা এবং শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ। আঁচল ফাউন্ডেশন উক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সমস্যা সমাধানে নিম্নোক্ত প্রস্তাবনা পেশ করে :
১. শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বাভাবিক ও ইনফরমাল সম্পর্ক তৈরি করা।
২. অতিরিক্ত সিলেবাস কমিয়ে যথাসময়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করে সেশনজট মুক্ত করা।
৩. পড়াশোনাকে আনন্দময় ও বাস্তবমুখী করা।
৪. প্রথাগত সিলেবাসের পরিবর্তে চাকরি বাজারের উপযোগী সিলেবাস প্রণয়ন।
৫. শিক্ষাঋণ চালু করা।
৬. স্ব স্ব ক্যাম্পাসে খণ্ডকালীন চাকরির ব্যবস্থা করা।
৭. ক্যারিয়ার গঠনে পরামর্শ ও সহায়তা পেতে বিভাগের উদ্যোগে অ্যালামনাইদের সাথে যোগাযোগ জোরদার করা।
৮. জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ।
৯. মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে বিভিন্ন সভা-সেমিনার আয়োজন করা।
১০. শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেয়া। প্রেস বিজ্ঞপ্তি
লাইফস্টাইল
মেডিটেশনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ কমতে পারে
বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় ছাত্রজীবন মানেই হচ্ছে নানান রকম প্রতিযোগিতা এবং পড়ালেখার চাপ। তাছাড়া পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে আসলেতো কথাই নেই। প্রজেক্ট শেষ করা, ফাইনাল পেপার তৈরি করা, প্রেজেন্টেশন দেওয়া এবং অবশ্যই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয়া—সবকিছু মিলিয়ে একটা হুলুস্থুল অবস্থা। এর পাশাপাশি যদি চাকরিজনিত জটিলতা থাকে, তবে প্রশান্ত মন নিয়ে থাকাটা বেশ মুশকিল হয়ে যায়। এ সমস্ত চাপজনিত টেনশনে থেকেও মনকে প্রশান্ত রাখার জন্য মেডিটেশনের কোনো জুড়ি নেই।
বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রমাণ করেছে যে, রোজ মেডিটেশন সব ধরনের মানুষের জন্য, বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের জন্য দারুন কিছু সুফল বয়ে নিয়ে আসে। শুধু তাই নয়, নানা ধরনের মানসিক চাপ মোকাবেলা করতে এবং শিক্ষার্থী জীবনটাকে আরো আনন্দপূর্ণ করে তোলে নিয়মিত মেডিটেশন চর্চা। শিক্ষার্থীদের ওপর বিভিন্ন গবেষণা থেকে বেশ চমকপ্রদ ফলাফল পাওয়া গেছে।
অঙ্ক ও ইংরেজিতে ভালো করতে পারছিল না ক্যালিফোর্নিয়ার এমন ১৮৯ শিক্ষার্থীর ওপর ২০০৯ সালে একটি গবেষণা চালানো হয়। তিন মাস ধরে প্রতিদিন দুবেলা তাদেরকে মেডিটেশন করতে বলা হয়। ফলাফল চমৎকার। দেখা গেল তিন মাস পর এদের মধ্যে ৭৮ জনই শুধু অঙ্ক আর ইংরেজিই নয়, সব বিষয়েই আগের চেয়ে ভালো করছে। বাকিরাও ভালো করছিল তাদের চেয়ে, যারা এই মেডিটেশন প্রোগ্রামের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।
সম্প্রতি শিক্ষার্থীদের চাপ কমাতে অভিনব এক পদ্ধতি চালু করেছে নেদারল্যান্ডসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়।
জানা গেছে, দেশটির নিজমেগনে অবস্থিত রেডবাউড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মন থেকে পরীক্ষার চাপ কমাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনেই খোলা কবর খুঁড়ে মেডিটেশনের ব্যবস্থা করেছে। সেখানে মেডিটেশনের জন্য রাখা হয়েছে একটি মাদুর এবং একটি কম্বল। শিক্ষার্থীদের মধ্যে এরই মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি করেছে খোলা কবরে শুয়ে মেডিটেশনের এ পদ্ধতি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, পদ্ধতিটি শিক্ষার্থীদের একাগ্রতা বাড়াচ্ছে। একই সঙ্গে স্নায়ুগুলি শিথিল হয়ে ধীরে ধীরে তাদের মানসিক চাপ কেটে যাচ্ছে। মাটির মধ্যে সম্পূর্ণ নিস্তব্ধতা মানসিক চাপ কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করছে।
এদিকে, গা ছমছমে অনুভূতি নিয়ে থাকতে হলেও খোলা কবরে মেডিটেশনের জন্য শিক্ষার্থীরা ব্যাপক উৎসাহ দেখাচ্ছে। অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য অনেকেই অনলাইনে আবেদন করছেন। অনেকে আবার রয়েছেন অপেক্ষমান তালিকায়।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী শান ম্যাকলফ্লিন জানান, তিনি এবং তার রুমমেট দেড় সপ্তাহ আগে খোলা কবরে মেডিটেশন করার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন। কিন্তু পদ্ধতিটি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে অপেক্ষমান তালিকা থেকে তাদের সিরিয়াল আসেনি। অধীর আগ্রহে তারা নিজেদের সিরিয়ালের অপেক্ষায় আছেন।
এরই মধ্যে এ প্রকল্পের পক্ষে ‘ মনে রেখো, তুমি মরে যাবে’ শিরোনামে ক্যাম্পাস পোস্টারও লাগানো হয়েছে। আর খোলা কবরে অভিজ্ঞতা নেওয়ার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ মিনিট থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত।
- আদালত6 years ago
গিয়াস কাদের চৌধুরীর হাইকোর্টে আগাম জামিন
- Fashion7 years ago
These ’90s fashion trends are making a comeback in 2017
- Entertainment7 years ago
The final 6 ‘Game of Thrones’ episodes might feel like a full season
- Fashion7 years ago
According to Dior Couture, this taboo fashion accessory is back
- Entertainment7 years ago
The old and New Edition cast comes together to perform
- Sports7 years ago
Phillies’ Aaron Altherr makes mind-boggling barehanded play
- আজকের ময়মনসিংহ6 years ago
সন্ত্রাসী হামলায় আহত বিএনপি নেতা মারা গেছেন
- Business7 years ago
Uber and Lyft are finally available in all of New York State