শরীরচর্চার পর যেসব খাবার খাবেন

যে ধরনের শরীরচর্চাই করেন না কেন, কিছু না কিছু শক্তি ব্যয় হবেই। একারণে ব্যায়াম বা শরীরচর্চার পর হারানো শক্তি ফিরে পেতে খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

শরীরচর্চা করে ঘাম ঝরলে বুঝে নিতে পারেন যে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় শক্তি হারিয়েছেন। তাই শরীরকে পুনরায় পুষ্ট করতে পুষ্টিকর কিছু খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু এসময় কোন ধরনের খাবার খেতে হবে তা অনেকে বুঝতে পারেন না। বিশেষজ্ঞদের মতে ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনারের পূর্বে শরীরচর্চা করে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীর সহজে আবারও সতেজ হতে পারে। কিন্তু কেউ এই নিয়মের বাইরে গিয়ে শরীরচর্চা করলে তিনি হালকা খাবার (স্ন্যাকস) খেতে পারেন। এক্ষেত্রে তাকে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এখানে শরীরচর্চার পর খাওয়া উচিত এমনকিছু হালকা খাবারের তালিকা দেয়া হলো।

* সিদ্ধ ডিম ও টোস্ট: বেথ ওয়ারেন নিউট্রিশন ডটকমের পুষ্টিবিদ বেথ ওয়ারেন বলেন, ‘ডিম ও টোস্ট শরীরকে দ্রুত সতেজ করতে পারে। এতে প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেটের সমন্বয় রয়েছে। ডিমের প্রোটিন পেশি পুনর্গঠন করবে, অন্যদিকে টোস্টের কার্বোহাইড্রেট শক্তির ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করবে। তিনি ব্যায়াম বা শরীরচর্চার পর ৩০ মিনিটের মধ্যে ডিম ও টোস্ট খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। ডিমকে ভালোভাবে সিদ্ধ করে খেতে হবে, হার্ড-বয়েলড যেটাকে বলে। ডিমকে হার্ড-বয়েলড করতে ১২ থেকে ১৪ মিনিট সেদ্ধ করুন।

* চিনাবাদামের মাখন ও আপেল: শরীরচর্চার সময় পেশিগুলো গ্লাইকোজেন তথা সংরক্ষিত গ্লুকোজ ব্যবহার করে এবং শরীরচর্চার পর শরীর এটা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে। এই প্রক্রিয়া সহজে সম্পন্ন করতে সঠিক খাবার খেতে হবে। ফিটনেস ট্রেইনার ও ইউটিউবার কার্লি রোয়েনার মতে, এসময় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে যা আপনাকে পরবর্তী প্রধান খাবার (যেমন- ডিনার) খাওয়ার আগপর্যন্ত চালিয়ে নিতে পারবে। তার মতে, চিনাবাদামের মাখন ও আপেল দ্রুত গ্লাইকোজেন স্টোরকে আপডেট করতে পারে, যার ফলে পেশিগুলো পুনরায় পুনর্গঠিত হতে পারে।

* কলা: যদি আপনি কঠোর শরীরচর্চা করেন, তাহলে কলা খাওয়ার কথা ভাবতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘাম ঝরে এমন ব্যায়ামের পর কলার মতো পুষ্টিকর খাবার খেলে শরীর নিজেকে পুনরায় সতেজ করতে বেগ পেতে হয় না। রাশেল হার্টলি নিউট্রিশন ডটকমের পুষ্টিবিদ রাশেল হার্টলি বলেন, ‘কলাতে প্রচুর পটাশিয়াম রয়েছে। এটা পেশির ব্যথা প্রতিরোধ করে। এছাড়া কলা শরীরের পানিশূন্যতাও পূরণ করে। এই ফলের প্রাকৃতিক শর্করা ক্লান্ত শরীরকে আবারও সবল করে তোলে।’

* বাদাম: শরীরচর্চার পর পেশিকে দ্রুত আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে বাদাম খাওয়ার কথা বিবেচনা করতে পারেন। লাভ সোয়েট ফিটনেস ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা কেটি ডানলপ বলেন, ‘বাদামে প্রোটিন রয়েছে। এটি দ্রুত শোষিত হয়, যার ফলে পেশিগুলো নিজেদেরকে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড পেয়ে থাকে।’ শরীরচর্চার পর বাদাম খেতে চাইলে কাঠবাদামকে অগ্রাধিকার দিতে পারেন, কারণ ৩৫ গ্রাম কাঠবাদামে ৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।

* পনির ও নাশপাতি: শরীরচর্চার পর পেশি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রোটিনের আরেকটি ভালো উৎস হলো পনির, বলেন রিয়েল নিউট্রিশন এনওয়াইসি ডটকমের পুষ্টিবিদ অ্যামি শাপিরো। ২৮ গ্রাম মজারেলা পনিরে ৬ গ্রাম এবং ১১০ গ্রাম কটেজ পনিরে ১২ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়া নাশপাতির মতো স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ ফল খাওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে। এটা দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করবে। একটি মধ্যম আকারের নাশপাতিতে প্রায় ২৭ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট পেতে পারেন। এর পরিবর্তে আপেলও খেতে পারেন।একটি মধ্যমে আকারের আপেলে প্রায় ২৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট রয়েছে।

Share this post

scroll to top