লিগ্যাল নোটিশের পর কেটে নেয়া টাকা ফেরত দিলো বাংলালিংক

ময়মনসিংহ লাইভ ডেস্ক : গ্রাহকের অনুমতি ব্যতিত স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইলের ব্যালেন্স থেকে টাকা কেটে নেয়ায় বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো: জহুরুল হককে বিবাদী করে আইনজীবির মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন ময়মনসিংহ লাইভ এর সম্পাদক মো. আব্দুল কাইয়ুম। এদিকে বাংলালিংকের অফিসিয়াল ইমেইল ও ডাকযোগে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর ১০ ঘন্টার মধ্যে প্রতারণার মাধ্যমে ব্যালেন্স থেকে কেটে নেয়া টাকা ফেরত দিয়েছে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ। টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়টি ১৬ জানুয়ারী সকালে গ্রাহককে কল দিয়ে নিশ্চিত করেছেন বাংলালিংকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা।

এদিকে ১৫ জানুয়ারী ২০২০ ইং তারিখ বুধবার ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবি মো: এমদাদুল হক স্বাক্ষরিত এক লিগ্যাল নোটিশে জানা যায়, মো. আব্দুল কাইয়ুমের ব্যবহৃত একটি নাম্বারের ব্যালেন্স থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গত ২৮,২৯ নভেম্বর ও ৬ ডিসেম্বর অতিরিক্ত গোপন চার্জ কর্তন করা হয়। বাংলালিংক ওয়েবসাইটের ই-সেলফ কেয়ার এর মাধ্যমে উক্ত গ্রাহক সকল কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি চেক করে কনফার্ম হন যে, ইতোপূর্বে তিনি কোন সার্ভিস চালু করেন নাই। বিষয়টি নিয়ে বাংলালিংকের গ্রাহক সেবা ১২১ ও ০১৯১১-৩০৪১২১ নাম্বারে অভিযোগ জানালে, তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ করা টাকা ফেরতের জন্য অভিযোগটি আমলে নেন ও পরবর্তী ১২ ঘন্টার মধ্যে অভিযোগটি সুরাহার আশ্বাস দেন। কিন্তু ১২ ঘন্টা পরে গ্রাহককেই ফোন দিয়ে আপডেট জানতে হয় ও হচ্ছে, সেইসাথে অভিযোগটির কোনো সুরাহা করতে পারেনি বাংলালিংক। এভাবে প্রতিবারই বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ তার এজেন্ট এর মাধ্যমে ১২ ঘন্টা করে সময় চেয়ে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারী পর্যন্ত সময়ক্ষেপন করে। এদিকে গত ১ লা জানুয়ারী গ্রাহকের ব্যবহৃত নাম্বারের কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রির অফিসিয়াল লিস্ট উত্তোলনের জন্য ময়মনসিংহের দুর্গাবাড়ী রোডে অবস্থিত বাংলালিংক মনোব্র্যান্ড এবং কেয়ার সেন্টারে গিয়েও কল লিস্ট পাননি। তাদের সিস্টেমে সমস্যা থাকার দরুন তারাও কবে নাগাদ লিস্ট দিতে পারবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি। এদিকে এবিষয়টি আবারো অভিযোগ আকারে গ্রাহক সেবা হেলপ লাইনে জানানো হলে ১৪ই জানুয়ারী বাংলালিংকের একজন এজেন্ট কল করে এই গ্রাহককে জানান যে, কোনো বাংলালিংক কাস্টমারকেই  তার নিজস্ব কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি দেয়া যাচ্ছে না । তাই লিগ্যাল নোটিশদাতা তার নোটিশে উল্লেখ করেন যে, আগামী ২৮ জানুয়ারীর মধ্যে তার কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি হাতে না পেলে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছেনা। কারণ, বাংলালিংক অফিসিয়ালভাবে শুধুমাত্র বিগত দুই মাসের কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি দিতে পারে। দুইমাস অতিক্রম হলে কোনোভাবেই কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি দিতে পারেনা গ্রাহককে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন কেন জাতীয় দৈনিকগুলোতে বাংলালিংক কর্তৃৃক গ্রাহকদের ভোগান্তির বিষয়ে সচেতন করছেন না সেজন্য কমিশনের চেয়ারম্যান মো : জহুরুল হককেও লিখিত জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এব্যাপারে অভিযোগকারীর সাথে (০১৩০৪১৯৭৭৪৪) নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ দুই মাস ধরে বিষয়গুলো নিয়ে বাংলালিংকে অভিযোগ করে আসছি কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছিলনা। বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ সময়ক্ষেপন করে দুই মাস অতিক্রম করে কল, এসএমএস ও রিচার্জ হিস্ট্রি সরবরাহ না করে প্রতারণার অভিযোগ থেকে বাঁচতে চায়। আমার মতো কোটি গ্রাহকের সাথে এমন প্রতারণা হয়ে থাকতে পারে, তাই দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে আমি আইনী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছি।

এব্যাপারে ময়মনসিংহ জজ কোর্টের আইনজীবি মো এমদাদুল হক (০১৭১৫-১৫২৮১৪) জানান, প্রতারণার মাধ্যমে বাংলালিংক গ্রাহকের ব্যবহৃত নাম্বার থেকে গোপন চার্জ কর্তন করার অভিযোগ আনায় বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক আস ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের চেয়ারম্যান মো: জহুরুল হককে বিবাদী করে মামলার পূর্ব প্রস্তুতি স্বরূপ বিবাদীদের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে লিখিত জবাব দাখিল করবে।

Share this post

scroll to top