রেড জোন এলাকায় ঘরে ইবাদত-উপাসনার নির্দেশ

মহামারি করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে রেড জোন এলাকায় সর্বসাধারণকে ইবাদত-উপাসনা নিজ নিজ ঘরে পালনের নির্দেশ দি‌য়ে‌ছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) মন্ত্রণাল‌য়ের এক নি‌র্দেশনায় এ আহ্বান জানা‌নো হ‌য়ে‌ছে।

এতে বলা হয়, বর্তমান বাংলাদেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগের চলমান ঝুঁকি বিবেচনায় দেশের যেকোনো ছোট বা বড় এলাকাকে লাল, হলুদ বা সবুজ জোন হিসাবে চিহ্নিত করার কার্যক্রম নিয়েছে। এরইমধ্যে কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সবার সঙ্গে পরামর্শক্রমে রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে সাধারণ জনসাধারণের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত/উপাসনার বিষয়ে নিম্নোক্ত নির্দেশ দেওয়া হলো:

১. ভয়ানক করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে লাল জোন (রেড জোন) হিসাবে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে মসজিদের খতীব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম ছাড়া অন্য সব মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামাজ আদায় এবং জুমার জামায়াতে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে ঘরে যোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।

২. উল্লিখিত এলাকার মসজিদে জামাত চালু রাখার প্রয়োজনে সম্মানিত খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ পাঁচ ওয়াক্তের নামাজে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনধিক ৫ জন এবং জুমার জামাতে অনধিক ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাইরের কোনো মুসল্লি মসজিদের ভেতরে জামায়াতে অংশ নিতে পারবেন না।

৩. একইসঙ্গে উল্লিখিত এলাকায় অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরকে স্ব স্ব উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।

৪. এ সময়ে সারাদেশে কোথাও ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলীগি তালীম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, যিকির ও দুআর মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন।

৫. অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এ সময়ে কোনো ধর্মীয় বা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত হতে পারবেন না।

৬. সব ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এই নির্দেশনা জারি করা হলো। উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানানো হলো। কোনো প্রতিষ্ঠানে উক্ত সরকারি নির্দেশ লঙ্ঘিত হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।

এতে আরও বলা হ‌য়ে‌ছে, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ৬ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে ইবাদত/উপাসনা করার নির্দেশ দেয়। পরে ৬ মে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উক্ত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে সুস্থ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে জামায়াতে নামাজের অনুমতি দেয়।

Share this post

scroll to top