রাত সাড়ে ৩টায় ক্লাস নিলেন উপাচার্য কলিমউল্লাহ

বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সদ্য বিদায়ী উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর। একের পর এক কর্মকাণ্ডে তিনি বিতর্কের জন্ম দিয়েই চলেছেন।

প্রতিদিন ২২ ঘণ্টা কাজ করার দাবি, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকা, একাই ২৬টি কোর্সের দায়িত্ব নেওয়া, হিন্দি গানে ড্যান্স, অনিয়ম দুর্নীতির প্রমাণ ও সর্বশেষ শিক্ষামন্ত্রীকে নিয়ে উদ্ভট মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দেন তিনি।

এবার রাত সাড়ে ৩টায় ক্লাস নিয়ে আবার বিতর্কে জড়ালেন বেরোবির সদ্য সাবেক এ উপাচার্য।

বুধবার (৯ জুন) দিনগত রাত সাড়ে ৩টায় অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ক্লাস নেন তিনি।

বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ১২তম ব্যাচের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের “পলিটিক্যাল থটস” কোর্সের দায়িত্ব নিয়েছিলেন নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। করোনাকালে অনলাইনে ক্লাস না নিলেও গত ৬ জুন থেকে ৯ জুন পর্যন্ত মাত্র চারটি ক্লাস নিয়েছেন তিনি।

বুধবার দিনগত রাত ৩টা ২৫ মিনিটের দিকে ক্লাস শুরু করে মাত্র ২৫ মিনিটে অর্থাৎ ৩টা ৫০ মিনিটে ক্লাস শেষ করেন। অনলাইন এ ক্লাসে ৬০ জনের মধ্যে ২৮ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। তবে শেষ পর্যন্ত মাত্র ১২ জন যুক্ত ছিলেন।

গভীর রাতে মাত্র ২৫ মিনিটের জন্য ক্লাস নিয়ে সদ্য সাবেক উপাচার্য কলিমউল্লাহ বিতর্কে যেন ঘি ঢেলে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সমালোচনা মূলক পোস্ট দিচ্ছেন। তাকে নিয়ে করছেন ট্রল। আবার অনেকেই এত রাতে শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

অন্যদিকে, বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বেরোবির ট্রেজারার হাসিবুর রশীদকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নবনিযুক্ত উপাচার্যকে অভিনন্দন বার্তা জানানো হয়। যেখানে হেডলাইনেই ইংলিশ বাংলার মিশ্রন দেখা যায়। এতে বলা হয় ‘বেরোবির নবনিযুক্ত উপাচার্যকে বর্তমান ভাইস-চ্যান্সেলর এর অভিনন্দন”
এ বিষয়েও বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্যকে বিদায়ী উপাচার্যের এমন শুভেচ্ছা বার্তা নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছেন অনেকেই।

এদিকে, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনে অনেক আগে থেকেই ক্লাস নিলেও বেরোবিতে এখনো অনলাইনে ক্লাস শুরু না করায় কয়েকদিন থেকেই বিতর্ক চলছিল। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেখানে এ সময়ে এসে বেরোবিতে অনলাইনে ক্লাসের ঘোষণা দেওয়ায় ক্ষোভে ফুসছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, দ্রুত স্বশরীরে পরীক্ষা নেওয়া হোক।

বেরোবি স্টুডেন্ট রাইটস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বায়েজিদ আহমেদ বলেন, আমরা করোনাকালে বারবার অনলাইন ক্লাস চেয়েছি। পাইনি। এখন এ সময়ে এসে অনেকেই স্বশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিলেও আমাদের এখানে সবেমাত্র অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়েছে। একজন উপাচার্য মেয়াদ শেষের দিকে এসে রাত সাড়ে ৩টায় ক্লাস নিয়ে আবার বেরোবিকে বিতর্কিত করলেন। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে কথা বলতে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল দেওয়া হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

Share this post

scroll to top