ময়মনসিংহ-ঢাকা রোডে ধর্মঘট স্থগিত: বাস চলাচল স্বাভাবিক

পরিবহন ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি ও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডাকা  আনুষ্ঠানিক ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকেই ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কে বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছে উত্তরাঞ্চলীয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

জানাযায়, জয়দেবপুর-টঙ্গীর ভাঙাচোরা রাস্তায় ঘন্টার পর ঘন্টা তীব্র যানজটে আটকের ফলে পরিবহণ ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় রবিবার (১৬ জানুয়ারী) থেকে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকামুখী সকল যোগাযোগ ব্যবস্থা অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেয় ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি। যেকারণে রবিবার সকাল থেকে ময়মনসিংহ বিভাগের চারটি জেলা (ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর ও জামালপুর) হতে ঢাকাগামী গণপরিবহন অনির্দিষ্টকালের কালের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।

পরবর্তীতে যোগাযোগ সচিবের অনুরোধ ও আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার আগামী ২৬ জানুয়ারী (বুধবার) আলোচনায় বসার প্রেক্ষিতে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের পরিবহণ ধর্মঘট স্থগিত করা হয় বলে এক প্রেস নোটে জানিয়েছে উত্তরাঞ্চলীয় মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ।

উল্লেখ্য, সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলকে জয়দেবপুর-টঙ্গীর যানজট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হুশিয়ার করে গত ২ জানুয়ারি ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছিল ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি। সেদিন অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট ঘোষণার সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মো. মমতাজ উদ্দিন মন্তা, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি, এফবিসিসিআই সহসভাপতি ও দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. আমিনুল হক শামীম, দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি শংকর সাহা, জেলা মোটর মালিক সমিতির মহাসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, সহ সভাপতি অধ্যাপক শ্যামল দত্ত, কোচ বিভাগের সম্পাদক সোমনাথ সাহা প্রমুখ।

ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের দাবী মতে, ‘পরিবহন মালিক শ্রমিকগণের নিজস্ব জরীপে দেখা যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রতি মিনিটে ৭টি যাত্রিবাহী গাড়ি বিভিন্ন রোড থেকে গাজীপুর হয়ে ঢাকা অভিমুখে চলাচল করে। হিসেব অনুযায়ী ঘণ্টায় যাতায়াত করছে ৪২০টি গাড়ি। ২৪ ঘন্টায় চলাচল করছে দশ হাজার ৮০টি গাড়ি। রাস্তা খারাপের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হয় ২০ লিটার বেশি। হিসেব অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় ১০ হাজার ৮০ গাড়িতে ২ লাখ এক হাজার ৬০০ লিটার তেল লাগে। যার অর্থমূল্য এক কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। প্রতিদিন মালিকদের তেল বাবদ নষ্ট হচ্ছে ওই টাকা। দিন দিন পরিবহন শিল্পের এই অতিরিক্ত খরচে মালিকরা তাদের গাড়ির কিস্তিসহ মেরামত যন্ত্রাংশ, টায়ার কোনটাই পরিচালনা করতে পারবে না। গাজীপুর-ঢাকার রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে আমদানী-রপ্তানি সহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল বহনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি ও দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিও রোধ করা যাচ্ছে না। তাই পরিবহন শিল্পসহ সকল ব্যবসায়ীমহলের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে ১৬ জানুয়ারি থেকে ধর্মঘট শুরুর ঘোষণা দেন।’

Share this post

scroll to top