ময়মনসিংহে মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার করে প্যাথলজি টেস্ট হচ্ছে

MMCH watermarkময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি ল্যাবে অনুমোদন ও মানহীন মেয়াদোত্তীর্ণ টেস্টিং কিট এবং রিএজেন্ট ব্যবহার করে প্যাথলজি টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রাজধানী ঢাকায় র‌্যাবের অভিযানে মেয়াদোত্তীর্ণ টেস্টিং কিট ও রিএজেন্টসহ নয় জনকে গ্রেফতারের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। ময়মনসিংহ মেডিক্যালের চারপাশে গড়ে ওঠা বেসরকারি ল্যাবসহ নগরীর নামিদামি ল্যাবগুলোতেও মেয়াদোত্তীর্ণ মানহীন ও অনুমোদনহীন এসব টেস্টিং কিট এবং রিএজেন্ট ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছেও রয়েছে এই খবর।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অভ্যন্তর ও বহির্বিভাগ, ওয়ানস্টপ সার্ভিসসহ করোনারি কেয়ার ইউনিট-সিসিইউ ল্যাবে ব্যবহার করা হচ্ছে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের অনুমোদন ও মানহীন নকল রিএজেন্ট এবং ভেজাল মেডিক্যাল টেস্টিং কিট। এসব রিএজেন্ট ও কিট জন্ডিস, ডায়াবেটিস, করোনাভাইরাস ও নিউমোনিয়া, এইডস ও ক্যানসারসহ বিভিন্ন প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষায় ব্যবহার করা হচ্ছে। গত ১৬ এপ্রিল রাজধানী ঢাকায় র‌্যাবের অভিযানে যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন ও মানহীন মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট এবং টেস্টিং কিট উদ্ধার ও জব্দ করা হয় তার একটি বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল। র‌্যাবের অভিযানে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হাইটেক হেলথ কেয়ার ও এক্স টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসের নামও ছিল। অভিযানকালে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী শামীম মোল্লা ও ম্যানেজার শহীদুল আলমকে আটক করা হয়। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অনুসন্ধানকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ল্যাবে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট ব্যবহারের তথ্য বের হয়ে আসে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বায়োল্যাব ইন্টারন্যালের রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট ব্যবহারের কথা স্বীকার করলেও তা মেয়াদোত্তীর্ণ নয় বলে দাবি করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, সিএমএসডি থেকে নেওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয়ভাবে এসব রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট কেনা হয়েছে। রাজধানীতে অভিযান শেষে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, এসব রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট আমদানির অনুমোদন ছিল না। এছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ও সহসা মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে এমন টেস্টিং কিট ও রিএজেন্ট দেশি-বিদেশি আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে সংগ্রহ করে বিশেষ মুদ্রণযন্ত্রের সাহায্যে টেম্পারিং করে মেয়াদ বাড়িয়ে বাজারে বিক্রি করছিল। বিষয়টি জানাজানির পরও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসব রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এসব রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় কতখানি নির্ভুল হচ্ছে সেটি নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। রাজধানী ঢাকায় র‌্যাবের অভিযানের পরও কার স্বার্থে ময়মনসিংহ মেডিক্যালে এসব রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট ব্যবহার করা হচ্ছে– এমন প্রশ্নও রয়েছে।

এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ওয়ায়েজউদ্দীন ফরাজী জানান, বিষয়টি অনুসন্ধানে হাসপাতালের উপপরিচালককে প্রধান করে গত ১৯ এপ্রিল চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।

ময়মনসিংহ মেডিক্যালের চারপাশে নগরীর বিভিন্ন ল্যাবে এসব রিএজেন্ট ও টেস্টিং কিট ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছে স্থানীয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Share this post

scroll to top